টাইটান ডুবোজাহাজের ভয়াবহ বিস্ফোরণের মুহূর্তটি ধারণ করা একটি শব্দ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের তদন্তে পাওয়া এই শব্দটির সূত্র ধরে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুনে আটলান্টিক মহাসাগরের গভীরে ডুব দেওয়ার সময় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছিল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ডুবোজাহাজটিতে থাকা যাত্রীদের একজন, যিনি ছিলেন ওশেনগেটের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশের স্ত্রী ওয়েন্ডি রাশ, বিস্ফোরণের ঠিক আগের মুহূর্তে একটি শব্দ শুনতে পান।
তদন্তের অংশ হিসেবে প্রকাশিত ফুটেজে শোনা যায়, ওয়েন্ডি রাশ তার সঙ্গীদের উদ্দেশ্যে বলছেন, “ওটা কিসের শব্দ?” ধারণা করা হচ্ছে, এই শব্দটাই ছিল ডুবোজাহাজটির ধ্বংসের মুহূর্ত।
ডুবোজাহাজটি যখন টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে যাচ্ছিল, তখন এটি সমুদ্রের প্রায় ৩,৩০০ মিটার গভীরে ছিল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে সাপোর্ট শিপে একটি বার্তা পাঠানো হয়েছিল যে ডুবোজাহাজটি দুটি ওজন ফেলে দিয়েছে।
কিন্তু অধ্যাপক ক্রিস রোমান, যিনি রোড আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের একজন অধ্যাপক, জানিয়েছেন, এই বার্তাটি সম্ভবত বিস্ফোরণের ঠিক আগ মুহূর্তে পাঠানো হয়েছিল, তবে কিছু কারিগরি কারণে তা সাপোর্ট শিপে দেরিতে পৌঁছেছিল।
কোস্টগার্ডের অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ওই বার্তা পাওয়ার মাত্র ছয় সেকেন্ড পরেই সাপোর্ট শিপের সঙ্গে ডুবোজাহাজটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপরই শুরু হয় ব্যাপক অনুসন্ধান অভিযান, যা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
ডুবোজাহাজটিতে থাকা পাঁচজন আরোহীর সবাই নিহত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন ওশেনগেটের প্রধান নির্বাহী স্টকটন রাশ, ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ এবং তার ছেলে সুলেমান, ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং এবং ফরাসি সমুদ্র বিশেষজ্ঞ পল-হেনরি নার্জিওলেট।
এই ঘটনার পর ডুবোজাহাজটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, প্রত্যেক যাত্রী ডুব দেওয়ার জন্য প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করেছিলেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওশেনগেট এবং এর প্রধান নির্বাহীর কার্যকলাপ নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যে, বিবিসি এবং নেটফ্লিক্স-এর মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পৃথক পৃথক তথ্যচিত্র নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন