বন্যজীবন দেখতে সেরা উপায়! গেম ড্রাইভ নয়, সাইকেল সাফারিতে মিলবে অন্যরকম আনন্দ!

আফ্রিকার বন্যপ্রাণী: প্রচলিত পথে নয়, সাইকেলে চড়ে উপভোগ করুন!

পর্যটকদের কাছে বন্যপ্রাণী দেখা সবসময়ই এক আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা। জঙ্গলে গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, বাঘ-সিংহের লুকোচুরি উপভোগ করা—এসব তো পরিচিত দৃশ্য।

তবে, আফ্রিকার বন্যজীবন উপভোগ করার আরও একটি অভিনব উপায় এখন জনপ্রিয় হচ্ছে, আর সেটি হলো সাইকেল সাফারী। সম্প্রতি এই ধরনের সাফারীর চাহিদা বাড়ছে, যা একইসঙ্গে বন্যপ্রাণী দেখা এবং পরিবেশ রক্ষার এক দারুণ সুযোগ তৈরি করে।

সাধারণ সাফারীগুলোতে গাড়িতে চড়ে বনের ভেতরে ঘোরাঘুরি করা হয়। যেখানে সাইকেল সাফারীতে, পর্যটকেরা সাইকেলে চড়ে বনের পথ পাড়ি দেন।

এতে বন্যপ্রাণীর আরও কাছাকাছি যাওয়া যায়, তাদের জীবনযাত্রাকে আরও নিবিড়ভাবে অনুভব করা যায়। সাইকেলে ভ্রমণ করার কারণে বন্যপ্রাণীরাও অনেকটা শান্ত থাকে, যা তাদের স্বাভাবিক আচরণ পর্যবেক্ষণে সাহায্য করে।

এছাড়াও, সাইকেল চালানোর মাধ্যমে শরীরচর্চাও হয়, যা ভ্রমণের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

আফ্রিকার বিভিন্ন স্থানে এখন সাইকেল সাফারীর আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো তাঞ্জানিয়ার সেরেনগেটি অঞ্চলের ‘ওয়াগোরা বাইক রাইড’। এই সাফারীর মূল উদ্দেশ্য হলো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধে লড়াই করা।

ওয়াগোরা বাইক রাইডের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ‘গ্রুমেটি ফান্ড’-এর মতো সংস্থায় দান করা হয়, যারা বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য কাজ করে।

এই ফান্ড বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য অ্যান্টি-পোচিং স্কোয়াড (anti-poaching squad) তৈরি করে, যা বন্যপ্রাণীদের শিকার থেকে রক্ষা করে।

একটি সাইকেল সাফারীর দিন শুরু হয় খুব ভোরে। সাধারণত, সূর্যোদয়ের আগেই রাইডাররা তাদের যাত্রা শুরু করেন। ভোরবেলা বন্যপ্রাণীরা সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে, তাই এই সময়ে তাদের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।

রাইডারদের জন্য হালকা নাস্তার ব্যবস্থা থাকে। এরপর তারা বনের পথ ধরে সাইকেল চালান, যা প্রায় ২০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

এই সময়ে তারা সিংহ, হাতি, জিরাফ, জেব্রা, এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীর দেখা পান। মাঝে মাঝে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বিরতি দেওয়া হয়, যেখানে জলখাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা থাকে।

সাইকেল সাফারী শুধু বন্যপ্রাণী দেখাই নয়, এটি প্রকৃতি এবং পরিবেশ সম্পর্কে জানারও একটি সুযোগ।

এই ধরনের ভ্রমণে স্থানীয় গাইডরা বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে থাকেন, যা ভ্রমণকারীদের জ্ঞান বৃদ্ধি করে। দিনের শেষে, রাইডাররা ক্যাম্পে ফিরে আসেন এবং বিশ্রাম নেন।

সাইকেল সাফারীগুলো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এই সাফারীর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ বন্যপ্রাণী রক্ষার কাজে ব্যয় করা হয়, যা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সহায়তা করতে সাইকেল সাফারী একটি দারুণ উপায়।

তাই, যারা বন্যপ্রাণী দেখতে ভালোবাসেন এবং একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষার জন্য কিছু করতে চান, তাদের জন্য সাইকেল সাফারী একটি আদর্শ অভিজ্ঞতা হতে পারে।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লিজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *