রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে নিহত অন্তত ১২ জন, ধ্বংসযজ্ঞ রাজধানী সহ বিভিন্ন শহরে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ এবং অন্যান্য অঞ্চলে রাশিয়ার ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। রবিবার ভোরে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। কিয়েভ সহ বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই হামলার ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে বন্দী বিনিময়ের প্রক্রিয়া চলছিল। ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত শান্তি আলোচনার পর এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা প্রদর্শনের বিরল একটি সুযোগ। তবে, শান্তি আলোচনা থেকে এখন পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত হয়নি।
কিয়েভে রাতের আকাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইউক্রেনীয় বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে রুশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার চেষ্টা চালিয়েছে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী কিয়েভে অন্তত ৪ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন।
হামলার কারণে ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন লেগে যায়। ঝিটোমির অঞ্চলে, কিয়েভের পশ্চিমে, তিনটি শিশু নিহত হয়েছে। তাদের বয়স ছিল ৮, ১২ এবং ১৭ বছর। এই অঞ্চলের হামলায় আরও ১২ জন আহত হয়েছে। খমেলনিটস্কি অঞ্চলে হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিৎসকো জানিয়েছেন, একটি ছাত্রাবাসে ড্রোন আঘাত হানে এবং ভবনের একটি অংশে আগুন ধরে যায়। ডিনিপ্রোভস্কি জেলায় একটি ব্যক্তিগত বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। শেভচেঙ্কোভস্কি জেলায় আবাসিক ভবনের জানালা ভেঙে গেছে।
ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণের পর গত ৪৮ ঘণ্টার হামলাগুলো ইউক্রেনের ওপর চালানো রাশিয়ার সবচেয়ে তীব্র বিমান হামলার মধ্যে অন্যতম। রবিবার বন্দী বিনিময়ের চূড়ান্ত পর্ব সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।
শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় উভয়ই জানায় যে উভয় পক্ষই আরো ৩০৭ জন করে সেনা সদস্যকে নিজ দেশে ফিরিয়ে এনেছে। এর আগে শনিবার উভয় পক্ষই মোট ৩৯০ জন সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দেয়। জেলেনস্কি তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছিলেন, “আমরা আগামীকাল আরও প্রত্যাশা করছি।” রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও বন্দী বিনিময় অব্যাহত রাখার আশা প্রকাশ করেছে, তবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
আগের রাতে কিয়েভে বিস্ফোরণ ও বিমান বিধ্বংসী গোলার শব্দ শোনা যায়, যার ফলে বহু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এবং মেট্রো স্টেশনে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আলোচনায়, যা রাশিয়ার ২০২২ সালের পূর্ণ-মাত্রার আক্রমণের পর দুই পক্ষের মধ্যে সরাসরি প্রথম বৈঠক ছিল, কিয়েভ ও মস্কো উভয়ই ১০০০ জন যুদ্ধবন্দী ও বেসামরিক বন্দী বিনিময়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস