মা মেয়ের উপর ক্ষেপে গিয়ে তুলকালাম! কাছে না থাকার ‘শাস্তি’

একজন নারীর পারিবারিক জটিলতা: মায়ের প্রত্যাশা আর সীমারেখার মাঝে দ্বিধা।

সম্প্রতি, অনলাইনে একটি আলোচনায় এক নারী তার মায়ের আচরণ নিয়ে নিজের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, তার মা তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করেন না এবং তিনি দূরে থাকেন বলে তাকে ক্রমাগতভাবে দোষারোপ করেন। এই বিষয়ে তিনি অন্যদের পরামর্শ চেয়েছেন।

ওই নারীর ভাষ্যমতে, তার মা সব সময়ই “কঠিন” প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তিনি একাধিকবার বিয়ে করেছেন এবং সামান্য বিষয় নিয়েও ঝগড়া করেন। মূলত, তিনি সবকিছু নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করেন। বাইরের লোকেদের কাছে তিনি একজন স্নেহময়ী বৃদ্ধার মতো, যিনি পরিবারের জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত, কিন্তু এর পেছনে থাকে কিছু শর্ত।

ওই নারী তার মায়ের থেকে দুই ঘণ্টার দূরত্বে বসবাস করেন। তার একটি ব্যস্ত চাকরি এবং বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। তার একটি প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েও রয়েছে, যে মায়ের কাছাকাছিই থাকে। অন্যদিকে, তার ভাই অবিবাহিত এবং তার কোনো সন্তান নেই। তার কাজটিও তুলনামূলকভাবে সহজ এবং তিনি মায়ের কাছাকাছিই থাকেন।

কিন্তু মায়ের সমস্ত মনোযোগ যেন ওই নারীর দিকেই। তিনি জানান, মা দিন দিন তার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। তিনি যখনই মায়ের সাথে কথা বলেন, মা তাকে দূরে থাকার জন্য দোষারোপ করেন এবং তার কষ্টের কথা বলেন। নারীটির মনে হয়, তিনি যেন মায়ের একাকিত্বের জন্য দায়ী।

তিনি আরও জানান, মা প্রায়ই এমন সময়ে ফোন করেন বা মেসেজ করেন, যা তার জন্য খুবই অসুবিধাজনক। তিনি দীর্ঘকাল ধরে মায়ের আবেগগত আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করেছেন এবং এতে তিনি ক্লান্ত। তার ভাইয়ের ক্ষেত্রে এমনটা হয় না।

ওই নারী তার ভাইকে এই দায়িত্ব ভাগ করে নিতে বলেছিলেন, কিন্তু তিনি কোনো আগ্রহ দেখাননি। যখনই তিনি মায়ের সাথে তার ব্যক্তিগত সীমা নির্ধারণ করতে চান, মা তখন “আহত” হওয়ার ভান করেন এবং তাকেই ভুল প্রমাণ করেন।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, তিনি জানতে চান কীভাবে তিনি এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন।

আলোচনায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ মানুষ ওই নারীর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। তবে তাদের মতে, এই ক্ষেত্রে নারীটির নিজেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। একজন মন্তব্যকারী বলেছেন, “আপনি সীমানা (বাউন্ডারি) তৈরি করার কথা বলছেন, কিন্তু আসলে কোনো সীমানা তৈরি করেননি।

অন্য একজন ব্যবহারকারী পরামর্শ দিয়েছেন, “আপনি আপনার মা বা ভাইকে কোনো কিছু করতে বাধ্য করতে পারবেন না। আপনি কেবল নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। আপনি ফোন ধরবেন কিনা, সেটা আপনার উপর নির্ভর করে। তিনি ফোন করবেন কিনা, সেটা আপনার হাতে নেই।

আরেকজন ব্যবহারকারী আরও যুক্ত করেন, “কথার চেয়ে কাজ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফোন ধরা বন্ধ করুন… মায়ের সাথে এমন আচরণ করুন, যেন তিনি একটি শিশুর মতো। তার থেকে দূরে থাকুন। যতক্ষণ আপনি তার জন্য উপলব্ধ থাকবেন, ততক্ষণ তিনি আপনার কাছেই প্রত্যাশা করবেন, কারণ তিনি যা চান, তাই পাচ্ছেন।

এই ঘটনা আমাদের সমাজে পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতা এবং প্রত্যাশার চাপগুলো নতুন করে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *