টম ক্রুজের ‘মিশন: ইম্পসিবল’ সিনেমার দুঃসাহসিক সব স্টান্ট: এক ঝলকে।
‘মিশন: ইম্পসিবল’ সিনেমা সিরিজটি বিশ্বজুড়ে সিনেমাপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। অ্যাকশন এবং থ্রিলার ঘরানার এই সিনেমাগুলোতে অভিনেতা টম ক্রুজের অসাধারণ সব স্টান্ট দর্শকদের মন জয় করে।
১৯৯৬ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই সিরিজের আটটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে, যেখানে টম ক্রুজ ইথান হান্ট নামক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নিজের চরিত্রটিকে আরও বাস্তব করে তুলতে, তিনি প্রায়ই সিনেমার ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যগুলোতে কোনো বডি ডাবলস ব্যবহার করেন না, বরং নিজেই সেগুলোতে অংশ নেন।
টম ক্রুজের এই ডেডিকেশন দর্শকদের কাছে সিনেমার আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে তোলে। সিনেমার শুটিংয়ের সময় আহত হলেও তিনি কাজ চালিয়ে যান, যা তার কাজের প্রতি একাগ্রতা প্রকাশ করে।
আসুন, মিশন ইম্পসিবল সিনেমার কিছু উল্লেখযোগ্য স্টান্ট সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:
প্রথম সিনেমা ‘মিশন: ইম্পসিবল’-এ বিস্ফোরিত অ্যাকুরিয়াম থেকে পালানো: ১৯৯৬ সালের এই সিনেমাতে একটি দৃশ্যে দেখা যায়, ইথান হান্টকে একটি অ্যাকুরিয়াম থেকে পালাতে হয়, যেখানে একটি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল। এরপর কাঁচের জানালা দিয়ে ঝাঁপ দেন তিনি, যা দর্শকদের মধ্যে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
তারের উপর ঝুলে থাকা: প্রথম সিনেমাতেই একটি দৃশ্যে দেখা যায়, ইথান হান্ট একটি তারের সাথে ঝুলে আছেন, যেখানে তিনি কিছু গোপন তথ্য উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন। এই দৃশ্যটি দর্শকদের শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্ত এনে দেয়।
ট্রেনের উপর ঝাঁপ: সিনেমার ক্লাইম্যাক্সে, ইথান হান্ট একটি হেলিকপ্টার থেকে চলন্ত ট্রেনের উপর ঝাঁপ দেন।
‘মিশন: ইম্পসিবল ২’-এ পাহাড়ের গা বেয়ে ওঠা: এই সিনেমার শুরুতে, টম ক্রুজকে ২,০০০ ফুটেরও বেশি উঁচু একটি পাথরের গা বেয়ে উঠতে দেখা যায়। যদিও দৃশ্যটিতে তার শরীরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল, তবুও এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
দৃষ্টির খুব কাছ দিয়ে ছুরি: ‘মিশন: ইম্পসিবল ২’-এর একটি দৃশ্যে ভিলেনের সাথে ইথান হান্টের মারামারি হয়, যেখানে একটি ছুরি অভিনেতার চোখের খুব কাছ দিয়ে যায়।
আকাশচুম্বী অট্টালিকা থেকে ঝাঁপ: ‘মিশন: ইম্পসিবল ৩’-এ ইথান হান্টকে সাংহাইয়ের আকাশচুম্বী অট্টালিকা থেকে ঝাঁপ দিতে দেখা যায়।
উচ্চ গতিতে দৌড়: এই সিনেমার একটি দৃশ্যে, ইথান হান্ট একটি বিস্ফোরিত গাড়ির থেকে বাঁচতে দৌড়াচ্ছিলেন।
বুর্জ খলিফায় আরোহণ: ‘মিশন: ইম্পসিবল – ঘোস্ট প্রটোকল’ সিনেমায়, টম ক্রুজ বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন, দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় আরোহণ করেন।
বিমানের সাথে ঝুলে থাকা: ‘মিশন: ইম্পসিবল – রোগ নেশন’ সিনেমায় একটি বিমানের সাথে ঝুলে থাকার দৃশ্যটি বেশ আলোচিত হয়।
পানির নিচে শ্বাসরোধকর দৃশ্য: এই সিনেমার একটি দৃশ্যে, ইথান হান্টকে পানির নিচে একটি ভল্ট থেকে কিছু তথ্য উদ্ধার করতে দেখা যায়।
লন্ডনের রাস্তায় বিল্ডিং থেকে বিল্ডিংয়ে ঝাঁপ: ‘মিশন: ইম্পসিবল – ফলআউট’ সিনেমায়, ইথান হান্টকে লন্ডনের আকাশে একাধিক বিল্ডিংয়ের উপর দিয়ে লাফ দিতে দেখা যায়।
উঁচু থেকে প্যারাস্যুটে অবতরণ: এই সিনেমার একটি দৃশ্যে, ইথান হান্ট এবং হেনরি ক্যাভিলকে প্যারাস্যুটের মাধ্যমে আকাশ থেকে প্যারাস্যুটিং করতে দেখা যায়।
হেলিকপ্টার চালনা: ‘মিশন: ইম্পসিবল – ফলআউট’-এ টম ক্রুজ নিজেই একটি হেলিকপ্টার চালান।
রোমে গাড়ির স্টান্ট: ‘মিশন: ইম্পসিবল – ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’-এ, ইথান হান্ট এবং হেইলি অ্যাটওয়েলকে একসাথে হাতকড়া পরানো অবস্থায় ইতালির রোমের সরু রাস্তাগুলোতে গাড়ি চালাতে দেখা যায়।
মোটরসাইকেল থেকে ঝাঁপ: ‘মিশন: ইম্পসিবল – ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’-এর একটি দৃশ্যে টম ক্রুজ একটি মোটরসাইকেল নিয়ে পাহাড় থেকে ঝাঁপ দেন।
ট্রেন দুর্ঘটনা: এই সিনেমার শেষ দৃশ্যে একটি ট্রেনের ধ্বংসস্তূপ দেখা যায়, যেখানে ইথান হান্ট এবং হেইলি অ্যাটওয়েলকে ট্রেনের ধ্বংসাবশেষ ধরে ঝুলে থাকতে দেখা যায়।
টম ক্রুজের এই ডেডিকেশন এবং অভিনব সব স্টান্ট সিনেমার দর্শকদের সবসময় মুগ্ধ করে।
তথ্যসূত্র: পিপল