শ্বাশুড়ির রান্নায় অ্যালার্জি, বৌমার নিজস্ব খাবার নিয়ে শুরু পরিবারের বিবাদ। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ঘটনা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
ঘটনাটি হলো, খাদ্য সংক্রান্ত কিছু সমস্যা নিয়ে এক নারীর সঙ্গে তার শাশুড়ির মনোমালিন্য। ২৯ বছর বয়সী ওই নারীর বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি গ্লুটেন ও দুগ্ধজাত খাবার খেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তার ভাষায়, সামান্য অস্বস্তি নয়, বরং শরীরে তীব্র ব্যথা, বমি এবং হজম সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়, যা কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বিষয়টি নিয়ে তিনি তার শাশুড়ির সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন। কিন্তু তারপরও পারিবারিক ভোজসভায় তার জন্য প্রস্তুত করা খাবারে এমন কিছু উপাদান পাওয়া যায় যা তিনি খেতে পারেন না।
যেমন, একবার ‘গ্লুটেন-ফ্রি’ পাস্তার সঙ্গে দেওয়া হয় সয়া সস, যা সাধারণত গম থেকে তৈরি করা হয়। বিষয়টি নজরে আনলে শাশুড়ি উত্তর দেন, “আহা, সামান্য তো! এতে কিচ্ছু হবে না।”
আরেকটি ঘটনায়, ‘দুগ্ধমুক্ত’ আলু ভর্তায় মেশানো ছিল মাখন। এমন পরিস্থিতিতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই নারী একপর্যায়ে নিজের খাবার সঙ্গে নিয়ে যেতে শুরু করেন।
কিন্তু এতে শাশুড়ি অসন্তুষ্ট হন এবং বিষয়টিকে তিনি তার রান্নার প্রতি অনাস্থা হিসেবে দেখেন।
পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে থাকে। সম্প্রতি এক পারিবারিক ভোজে শাশুড়ি ওই নারীকে নিজের খাবার খেতে বাধা দেন এবং তার রান্না করা খাবার চেখে দেখতে জোর করেন।
ওই নারী জানান, “আমি যখন অসুস্থ হয়ে পড়ি, তখন তিনি আমাকে ‘অবাধ্য’ বলেন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ করেন।” উত্তরে তিনি জানান, “আমার স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো আপস নেই। নিজের শরীরের যত্ন নেওয়ার জন্য আমি দুঃখিত নই।”
এরপর তিনি সেই ভোজসভা ত্যাগ করেন।
বর্তমানে এই ঘটনার জেরে পরিবারে ফাটল ধরেছে। এমনকি তার স্বামীও মনে করেন, পরিস্থিতি অন্যভাবে সামলানো যেত।
স্বামীর পরিবারের সদস্যরা তার উপর ক্ষুব্ধ এবং শাশুড়ি নিজেকে ভুক্তভোগী হিসেবে উপস্থাপন করছেন।
তবে, অনেকে মনে করেন, ওই নারীর নিজের খাবার নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কারণ, শাশুড়ি তার খাদ্যতালিকা সম্পর্কে অবগত হওয়া সত্ত্বেও, বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি।
খাবারের প্রতি মানুষের দুর্বলতা এবং পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েন – এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বর্তমান সমাজে এমন ঘটনা নতুন নয়। খাদ্য নির্বাচনে ভিন্নতা এবং পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রায়ই দেখা যায়।
এই ঘটনায়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং সহানুভূতি কতটা জরুরি, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল