যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রমাগত সমালোচনার মধ্যে সততা ও জনসেবার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এই কথা বলেন।
ট্রাম্প সুদের হার দ্রুত কমানোর জন্য পাওয়েলের তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং তাকে বিভিন্ন সময় ‘বোকা’ ও ‘বড় পরাজিত’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
পাওয়েল তার বক্তব্যে তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনাদের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের যে সম্ভাবনা রয়েছে, আমি আপনাদেরকে আহ্বান জানাই, আপনারা সবাই সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনে ব্রতী হোন।
তিনি আরও বলেন, “আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পর, যখন আপনারা আয়নার সামনে দাঁড়াবেন, তখন যেন বলতে পারেন, আপনারা আপনাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিক কাজটি করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে ২০১৮ সাল থেকে দায়িত্ব পালনকালে পাওয়েল কোভিড-১৯ মহামারী, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং অস্থির বাণিজ্য যুদ্ধের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছেন।
ট্রাম্প সরাসরিভাবে পাওয়েলের সমালোচনা করলেও, পাওয়েল সাধারণত এসব মন্তব্যের জবাব দেননি।
নভেম্বরে তিনি জানান, ট্রাম্প তাকে পদত্যাগ করতে বললে, আইন অনুযায়ী তা সম্ভব নয়।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, ফেডারেল রিজার্ভের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবেন।
এর প্রধান কারণ হলো, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা।
ফেডারেল রিজার্ভের এই সিদ্ধান্তের ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর প্রভাব কেমন হবে, সে বিষয়ে অনেকের মধ্যে উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে।
গত ১৭ই মে, ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়েলকে সুদের হার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে, মে মাসের শুরুতে, ফেডারেল রিজার্ভ তাদের বেঞ্চমার্ক ঋণ নেওয়ার হার ৪.২৫% থেকে ৪.৫%-এর মধ্যে অপরিবর্তিত রেখেছে, যা জানুয়ারি মাস থেকে একই অবস্থানে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করেন, সুদের হার কমানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপর ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
শিকাগো ফেডারেল রিজার্ভের প্রেসিডেন্ট অস্টান গூல்সবি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “সবকিছুই বিবেচনা করা হচ্ছে।
তবে, পরিস্থিতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা আরও বেশি সতর্ক থাকতে চাই।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে, যার সম্ভাব্য প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক এবং টাকার মূল্যের উপর।
তথ্য সূত্র: সিএনএন