শিরোনাম: মায়ের আবদার: গ্র্যাজুয়েট মেয়ের কাছে মাসিক ভাতার দাবি, টানাপোড়েনে তরুণীর ভবিষ্যৎ
সম্প্রতি, একজন তরুণী, যিনি সদ্য কলেজ পাশ করেছেন এবং একটি ভালো চাকরি করছেন, তার মায়ের কাছ থেকে মাসিক ভাতার দাবিতে এক কঠিন পরিস্থিতিতে পড়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি পরামর্শ চেয়েছেন একটি অনলাইন ফোরামে।
মা চেয়েছেন মেয়ের কাছ থেকে মাসে ১০০০ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ। এই ঘটনায় একদিকে যেমন মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবনের স্বপ্ন, তেমনই রয়েছে মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনের চাপ।
জানা যায়, মেয়েটি আগে তার মাকে কথা দিয়েছিলেন যে তিনি মায়ের খারাপ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করবেন। মায়ের সঙ্গে তার বাবার সম্পর্ক ভালো ছিল না, যা পুরো পরিবারের উপর খারাপ প্রভাব ফেলেছিল।
সেই সময় মেয়েটি মাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, এখন বিষয়গুলো জটিল আকার ধারণ করেছে। মেয়ের ভাষ্যমতে, মা এখন তার কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য আশা করেন, যদিও মেয়েটি নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন।
এই তরুণী জানান, তিনি পাঁচ বছর ধরে বাড়ির বাইরে থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনি সবসময়ই চাইতেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে।
পড়াশোনার পাশাপাশি একটি চাকরি করে নিজের খরচ চালাতেন এবং নিয়মিত মাকে কিছু টাকা পাঠাতেন। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর, তিনি একটি ভালো বেতনের চাকরি খুঁজে পান। তিনি নিজের জীবন ও আর্থিক সুরক্ষার উপর মনোযোগ দিতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু মায়ের এই নতুন আবদার যেন পুরনো সমস্যার পুনরাবৃত্তি।
মেয়ের এখন নিজের শহর ছেড়ে অন্য শহরে থাকতে হচ্ছে, যেখানে তাকে ঘর ভাড়া, গাড়ির কিস্তি, এবং ছাত্র ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে। এছাড়া, নিজের পেশাগত উন্নয়নের জন্য প্রতি বছর তাকে কয়েক হাজার ডলার খরচ করতে হয়।
এমন পরিস্থিতিতে মায়ের ১০০০ ডলারের আবদার তরুণীর জন্য এক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
মেয়ের অভিযোগ, মা তার পাঠানো টাকা প্রয়োজনীয় জিনিসের পরিবর্তে অপ্রয়োজনীয় খাতে খরচ করেন। তিনি বলেন, “মা এখন কাজ করতে চান না এবং আমার পাঠানো টাকা দিয়ে তিনি নামিদামি ব্র্যান্ডের পোশাক কেনেন, এমনকি ভাইদের জন্য কিনে আনেন প্রচুর জাঙ্ক ফুড, যেখানে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার কথা।”
মেয়ের মা আগে তার স্বামীর কারণে কাজ করতে পারেননি। যদিও তিনি গৃহিণী হিসেবে ভালোই ছিলেন।
কিন্তু এখন সম্পর্ক ভাঙার পরে, তিনি কাজ না করার জন্য বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন। মেয়ের মতে, মা বলছেন, “সংস্কৃতিতে নাকি তার কাজ করাটা ভালো চোখে দেখা হয় না, লোকে তাকে খারাপ বলবে।”
এই ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন মেয়েটি তার মাকে জানায় যে, তিনি এই মুহূর্তে এত টাকা দিতে পারবেন না। মা তখন বলেন, “আমার ৫ ভাইবোন আছে, তারা দিনে মাত্র ৩০ ডলার রোজগার করে, তার চেয়ে বেশি তো আমি দেব না।”
মেয়েটি তখন এই যুক্তির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন।
এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন মায়ের আর্থিক চাহিদা, তেমনই মেয়ের নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন। কিভাবে তিনি এই উভয় সংকট থেকে মুক্তি পাবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এই ঘটনা আমাদের সমাজে মা-মেয়ের সম্পর্কের গভীরতা এবং আর্থিক দায়িত্ববোধের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: পিপলস