ভূমিকম্পের ভয়ে কাঁপছে জাপান! পর্যটকদের ভ্রমণ বাতিল, আসল ঘটনা!

ভূমিকম্পের আশঙ্কায় জাপানে পর্যটকদের ভ্রমণ বাতিল, দুর্যোগ মোকাবিলায় শিক্ষা

জাপানে আসন্ন ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের জেরে দেশটির পর্যটন শিল্পে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি কমিক বই এবং কয়েকজন ভবিষ্যৎ বক্তার ভূমিকম্প সংক্রান্ত ধারণা ভ্রমণকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

এর ফলে বিশেষ করে পূর্ব এশিয়ার অনেক পর্যটক তাদের ভ্রমণ বাতিল করছেন অথবা ভ্রমণের তারিখ পরিবর্তন করছেন।

১৯৯৯ সালে শিল্পী রyo Tatsuki এর আঁকা “The Future I Saw” নামের কমিক বইটিতে ২০১১ সালের মার্চ মাসে একটি বড় ধরনের দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে।

পরবর্তীতে, ২০২১ সালে বইটির “সম্পূর্ণ সংস্করণ”-এ এই বছর জুলাই মাসে আরেকটি বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, জাপান এবং হংকংয়ের কয়েকজন ভবিষ্যৎ বক্তা একই ধরনের সতর্কবার্তা দিয়েছেন। এর ফলস্বরূপ, অনলাইনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে এবং অনেকে তাদের ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করতে শুরু করেন।

হংকং-ভিত্তিক একটি ভ্রমণ সংস্থার পরিচালক সিএন ইউয়েন জানিয়েছেন, ইস্টার ছুটির সময় জাপানে বুকিং প্রায় অর্ধেক কমে গেছে এবং আগামী দুই মাসে এই সংখ্যা আরও কমতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্প কখন আঘাত হানবে, তা সঠিকভাবে বলার মতো প্রযুক্তি এখনো পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। জাপানে ভূমিকম্প একটি স্বাভাবিক ঘটনা এবং দেশটি শক্তিশালী কম্পন প্রতিরোধের জন্য সুপরিচিত।

তবে, কিছু মানুষের মধ্যে ভবিষ্যৎ বক্তাদের কথা এবং সামাজিক মাধ্যমের গুজবের কারণে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রধান শিকার হয়েছেন চীন ও হংকংয়ের পর্যটকেরা, যারা জাপানে দ্বিতীয় ও চতুর্থ বৃহত্তম পর্যটকদের উৎস।

এছাড়া, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, অনেকে তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা স্থগিত করছেন। অনেকে আবার মনে করছেন, ভ্রমণের পরিকল্পনা এখনই বাতিল করা ভালো।

ভূমিকম্পের এই উদ্বেগের মধ্যে, জাপানে পর্যটকদের আগমন এখনো উল্লেখযোগ্য হারে রয়েছে। জাপান জাতীয় পর্যটন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ১ কোটি ৫ লক্ষ পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করেছেন।

শুধু তাই নয়, একই সময়ে প্রায় ২৩ লক্ষ ৬০ হাজার চীনা পর্যটক এবং ৬ লক্ষ ৪৭ হাজার ৬০০ জন হংকংয়ের পর্যটক জাপান ভ্রমণ করেছেন।

এই পরিস্থিতিতে, মিয়াগি প্রিফেকচারের গভর্নর ইয়োশিহিরো মুরাই সামাজিক মাধ্যমে ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে পর্যটনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

জাপানের ক্যাবিনেট অফিসও তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া এখনো সম্ভব হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং এর পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন। তবে, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়াটা জরুরি। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও প্রস্তুতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে।

বাংলাদেশ একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ এবং এখানে প্রায়ই ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যায়। তাই, দুর্যোগের সময় মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া এবং সচেতনতা বাড়ানো খুবই জরুরি।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *