গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় শিশুদের আর্তনাদ: নিহত ৫০!

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫০ জনের বেশি, ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল ও ঘরবাড়ি।

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় সোমবার সকাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলে চালানো এসব হামলায় একটি স্কুল এবং একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজা সিটির দারাজ পাড়ার ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়, এতে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। এছাড়া, জাবালিয়ায় একটি পরিবারের বাসভবনে হামলায় ১৯ জন নিহত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসসালের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত স্কুলটিতে ‘শত শত’ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। হামলার পর ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীরা হতাহতদের উদ্ধারে ছুটে যান।

আল জাজিরার সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, ক্লাসরুমে আগুন জ্বলছে, যেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষ ঘুমিয়েছিল। এছাড়া, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটি শিশু একা ঘুরে বেড়াচ্ছিল এবং বাইরে থেকে লোকজন জানালা ভাঙার চেষ্টা করছিল।

এদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা হামাসের একটি কন্ট্রোল সেন্টারকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছিল, যেখানে ‘গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসী’রা অবস্থান করছিল। তারা আরও জানায়, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে তারা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিল।

অন্যদিকে, জাবালিয়া শহরে আবদ রাব্বো পরিবারের বাসভবনে চালানো হামলায় ১৯ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাহমুদ বাসসাল। গাজা সিটিতে একটি তাঁবু শিবিরেও বোমা হামলা হয়েছে, তবে এতে ৬ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে, যদিও তা নিশ্চিত করা যায়নি।

আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে জোর দিয়ে বলেছেন, গাজার পুরো নিয়ন্ত্রণ না নেওয়া পর্যন্ত তারা সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখবেন। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী, স্কুলসহ বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা চালানো নিষিদ্ধ।

কিন্তু গাজায় ১৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধে ইসরায়েল বারবার স্কুলগুলোতে বোমা হামলা চালিয়েছে, যেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। এর আগে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে গাজা সিটির আল-বুরাক স্কুলে বোমা ও আর্টিলারি হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছিল।

এছাড়া, গত বছর আগস্টে আল-তাবিন স্কুলে ভোরে প্রার্থনার সময় একশ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *