রোমানিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস ডানের শপথ গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে, তবে কট্টর-ডানপন্থীদের বিরোধিতার মধ্যে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা এখনো কাটেনি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ডানের জয় নিয়ে তারা ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন।
খবরটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরায় প্রকাশিত হয়েছে।
নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড্যান, যিনি ইউরোপপন্থী হিসেবে পরিচিত, সোমবার এক ভাষণে দেশকে একটি “নতুন দিগন্তে” নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। যদিও কট্টর-ডানপন্থী রাজনৈতিক নেতা জর্জে সিমিয়ন এই নির্বাচনকে “অভ্যুত্থান” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
সিমিয়নের দল, অ্যালায়েন্স ফর দ্য ইউনিয়ন অফ রোমানিয়ানস (AUR), শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করে একে “জাতীয় বিশ্বাসঘাতকতা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
গত নভেম্বরের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কারণে ভোট বাতিল হওয়ার পর, মে মাসে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ড্যান এর আগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো-র প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
শপথ গ্রহণের ভাষণে তিনি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে দেশকে স্থিতিশীল করার অঙ্গীকার করেন এবং সমাজের কথা শোনার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জাতীয় স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানান।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর, সিমিয়ন বিদেশি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলেন, যদিও তিনি এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। তবে, দেশটির সাংবিধানিক আদালত সিমিয়নের আবেদন খারিজ করে নির্বাচনের ফল বৈধ ঘোষণা করেছে।
ডানের বিজয়কে ইউরোপে স্বাগত জানানো হয়েছে, বিশেষ করে প্রতিবেশী ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। কারণ, এই জয় রোমানিয়ার পশ্চিমা জোটের প্রতি সমর্থন বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ডানের সামনে এখন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তাকে প্রথমে একজন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে হবে, যিনি নতুন সরকার গঠনে সহায়তা করতে পারবেন। তাছাড়াও, দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করাটাও জরুরি।
ড্যান সম্ভবত অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ইলি বোলন-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, যিনি ন্যাশনাল লিবারেল পার্টির সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন।
অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রোমানীয়দের জন্য ড্যান তেমন কোনো সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেননি। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রের আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনা প্রয়োজন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আর্থিক বাজারে স্থিতিশীলতার বার্তা পাঠানো এবং বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করা দেশের স্বার্থে জরুরি।”
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা