নতুন সংবাদ: কানাডায় বাদশাহ তৃতীয় চার্লসের সফর, ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ।
যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস, যিনি একই সাথে কানাডারও রাষ্ট্রপ্রধান, আগামী সোমবার কানাডা সফরে যাচ্ছেন। এই সফরটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যেকার কিছু উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এই ধরনের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাদশাহ চার্লসের এই সফরকে কানাডার প্রতি সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কানাডার পার্লামেন্টে বাদশাহ তৃতীয় চার্লস ভাষণ দেবেন এবং দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান জানাবেন। এই সফরে তাঁর সঙ্গে থাকবেন কুইন ক্যামিলা।
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিলেও, বাদশাহ চার্লস মঙ্গলবার পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘সিংহাসন থেকে ভাষণ’ দেবেন। উল্লেখ্য, এই ভাষণটি সাধারণত কানাডায় ব্রিটিশ রাজার প্রতিনিধি গভর্নর জেনারেল দিয়ে থাকেন।
বাদশাহের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায়ই কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করার কথা বলছেন।
এমনকি তিনি এমন একটি ধারণা প্রচার করছেন যে, কানাডার জনগণ নাকি এই প্রস্তাব পছন্দ করে। যদিও বাস্তবে, কানাডার মানুষের মধ্যে এই প্রস্তাবের প্রতি তেমন কোনো আগ্রহ নেই।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি, যিনি ট্রাম্প বিরোধী মনোভাবের ওপর ভিত্তি করে ক্ষমতায় এসেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন।
নির্বাচনের পর দেওয়া ভাষণেও কার্নি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন যে, কানাডা কখনোই ট্রাম্পের উস্কানিমূলক কথায় নতি স্বীকার করবে না। গত মাসে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে কার্নি তাঁর এই অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করেন।
তিনি ট্রাম্পকে বলেছিলেন, “কিছু জায়গা আছে, যা কখনোই বিক্রির জন্য নয়। কানাডা তেমনই একটি দেশ।”
কানাডার পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত র্যালফ গুডেল জানিয়েছেন, বাদশাহ চার্লস এই সফরে কার্নির একই বার্তা পুনর্ব্যক্ত করবেন। গুডেল আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী (কার্নি) পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, কানাডা এখন বা ভবিষ্যতে কখনোই বিক্রির জন্য নয়।
বাদশাহ, যিনি আমাদের দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, তিনি এই বার্তার শক্তি ও গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেবেন।”
এই সফরকালে বাদশাহ চার্লসকে একটি কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। কারণ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চান।
একই সঙ্গে তিনি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিশ্চয়তাও চাইছেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানিয়েছেন, বাদশাহ চার্লস দ্বিতীয়বার ট্রাম্পকে রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রন জানানোয় তাঁর দেশের মানুষ ‘খুশি হয়নি’। উল্লেখ্য, আধুনিককালে কোনো ব্রিটিশ রাজার দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রীয় আতিথেয়তা পাওয়া প্রথম নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতা হবেন ট্রাম্প।
বাকিংহাম প্যালেস সূত্রে জানা গেছে, রাজা ও কুইন ক্যামিলা তাঁদের আসন্ন সফরের গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত আছেন। প্যালেসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “রাজা ও কুইন এই সংক্ষিপ্ত সফরটি ফলপ্রসূ করতে আগ্রহী।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন।