গর্ভবতী মায়ের সিদ্ধান্তে তোলপাড়! বাচ্চার জন্মের সময় যা ঘটল…

প্রসবের সময় হাসপাতালে বাবা-মায়ের উপস্থিতি নিয়ে এক দম্পতির মনোমালিন্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনার প্রকাশ।

প্রসবের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে, এক দম্পতির জীবনে নেমে এসেছে চরম উদ্বেগ। তাদের প্রথম সন্তানের আগমনের প্রহর গোনা হচ্ছে, কিন্তু এরই মধ্যে হাসপাতালে সন্তানের জন্মের সময় এবং পরবর্তীতে অভিভাবকদের উপস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র মতবিরোধ। বিষয়টি নিয়ে সাহায্য চেয়েছেন হবু মা, এবং তার এই অভিজ্ঞতা তিনি তুলে ধরেছেন একটি অনলাইন ফোরামে।

জানা যায়, ওই নারী ও তাঁর স্বামী সন্তান জন্মাবার পর কিছু সময় একান্তে কাটাতে চান, যেখানে বাইরের কারও প্রবেশাধিকার থাকবে না। কিন্তু তাঁর বাবা-মা, বিশেষ করে বাবা, এই বিষয়টি মানতে নারাজ। তাঁরা চান, হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করতে এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই যেন তারা নবজাতকের মুখ দেখতে পারেন। হবু মায়ের ভাষ্যমতে, তাঁর বাবা-মা তাঁদের এই ইচ্ছের প্রতি সম্মান দেখাচ্ছেন না।

ওই নারীর মা নাকি জোর করে বলেছেন যে, তিনি এবং তাঁর বাবা দুজনেই হাসপাতালে অপেক্ষা করতে চান। এই বিষয়ে ওই নারী জানান, তিনি চান না তাঁর উপর কোনো চাপ সৃষ্টি হোক। তাঁর বাবা চান, সন্তানের জন্মের পরদিন সকালে তাঁদের জন্য নাস্তার ব্যবস্থা করতে, কিন্তু মা ও হবু সন্তানকে অন্তত বারো ঘণ্টা একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ দিতে নারাজ তিনি।

এই দম্পতির উদ্বেগের কারণ হলো, তাঁদের পরিবারের পুরোনো কিছু ঘটনা। ওই নারীর সৎ বোনের সন্তান জন্মগ্রহণের সময় তাঁর বাবা সেখানে বিনা আমন্ত্রণে উপস্থিত হয়েছিলেন। এমনকি, সবার আগে তিনিই নাতির কোলে তুলে নিয়েছিলেন। এছাড়াও, একবার তিনি তাঁর এক নাতির কপালে চুমু খেয়েছিলেন, যখন সন্তানের বাবা-মা এমনটা করতে নিষেধ করেছিলেন। হবু মা জানান, তাঁর বাবা নাকি তাঁর সন্তানের ক্ষেত্রেও একই কাজ করার পরিকল্পনা করছেন।

পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর রূপ নিয়েছে যে, হবু মা তাঁর বাবা-মায়ের হাসপাতালে আসার বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছেন না। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর অনিচ্ছা সত্ত্বেও কেউ যদি সেখানে উপস্থিত হন, তাহলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এমনকি, তিনি তাঁর পরিবারের লোকেদের থেকে তাঁর অবস্থান গোপন রাখতে লোকেশন শেয়ারিং বন্ধ করে দিয়েছেন।

এই ঘটনার জেরে হবু মা মানসিক চাপ অনুভব করছেন। তিনি তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তাঁর বাবা-মা’র এমন আচরণে তিনি অত্যন্ত হতাশ। মা হিসেবে সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি শঙ্কিত।

এই ঘটনার পর, ওই নারীর মা তাঁর বাবার কাছে সব কথা জানান। এরপর বাবা পারিবারিক গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান এবং তাঁর লোকেশন বন্ধ করে দেন। ওই নারী জানান, তাঁর বাবা-মাকে তিনি যথেষ্ট ভালোভাবেই চেনেন, তাই এমনটাই ঘটবে তিনি আশা করেছিলেন।

তবে সব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, এই দম্পতি তাঁদের সন্তানের আগমনের অপেক্ষায় রয়েছেন। তাঁরা তাঁদের নতুন জীবন শুরু করার জন্য মুখিয়ে আছেন।

বর্তমানে, পরিবারগুলোতে সন্তানের জন্ম এবং পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের চিন্তা-ভাবনা দেখা যায়। অনেক পরিবারে, বিশেষ করে যৌথ পরিবারে, প্রসবের সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের উপস্থিত থাকার একটা প্রবণতা থাকে। তবে, আধুনিক যুগে অনেক দম্পতি তাঁদের ব্যক্তিগত স্থান এবং সময়কে গুরুত্ব দেন। এই পরিস্থিতিতে, পরিবারগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সম্মান বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

তথ্য সূত্র: বিভিন্ন সূত্র, একটি রেডডিট পোস্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *