সকালটা মাটি? স্নুজ অ্যালার্মের ভয়ংকর সত্যি!

ঘুম থেকে ওঠার পর ‘স্নুজ’ বোতামটি টিপে আরও কিছুক্ষণ ঘুমানোর অভ্যাস অনেকেরই আছে।

কিন্তু ঘুমের এই সামান্য বিরতি কি আদতে আমাদের ভালো ঘুমকে ব্যাহত করে? সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন।

তাঁদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এই অভ্যাস ঘুমের গুণগত মান কমিয়ে দিতে পারে এবং দিনের বেলায় শরীরে ক্লান্তিভাব সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুম মানবদেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়ে যায়।

গভীর ঘুমের সময় মস্তিষ্কের কোষগুলো নিজেদের মেরামত করে এবং স্মৃতি তৈরি হয়।

প্রথম অ্যালার্ম বাজার পর ‘স্নুজ’ বাটন চাপলে, ঘুম গভীর হওয়ার আগেই তা ভেঙে যায়।

ফলে গভীর ঘুমের এই পর্যায়টি আর পাওয়া যায় না।

ঘুম বিশেষজ্ঞ এবং ব্রিgham অ্যান্ড উইমেনস হাসপাতালের সহযোগী বিজ্ঞানী ড. রেবেকা রবিন্স এর মতে, ‘স্নুজ’ বাটন চাপলে ঘুম খণ্ড খণ্ড হয়ে যায়, যা ঘুমের গুণগত মান কমিয়ে দেয়।

তবে, সবার ক্ষেত্রে যে এটি ক্ষতিকর, তেমনটা নয়।

নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিনের পালমোনারি, ক্রিটিক্যাল কেয়ার এবং স্লিপ মেডিসিনের চিকিৎসক ড. জাস্টিন ফিয়ালার মতে, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যারা ‘নৈশপ্রকৃতির’ মানুষ, তাঁদের জন্য স্নুজ বাটন উপকারী হতে পারে।

রাতের পাখি বা ‘নৈশপ্রকৃতির’ মানুষেরা সাধারণত রাতের বেলা জেগে থাকতে পছন্দ করেন।

তাঁদের যদি সকালের নির্দিষ্ট সময়ে উঠতে হয়, তবে স্নুজ বাটন তাঁদের জন্য ঘুমের এই আকস্মিক পরিবর্তনকে সহজ করতে পারে।

ড. রবিন্সের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ‘স্নুজ’ করেন, তাঁরা প্রথম অ্যালার্ম বাজার পর গড়ে প্রায় ১১ মিনিট ঘুমান।

হিসাব করে দেখা গেছে, এর ফলে মাসে প্রায় এক রাতের ঘুমের সমান সময় নষ্ট হয়।

ঘুমের সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখা খুবই জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।

ঘুমের সময় এবং ঘুমের পরিমাণ ঠিক রাখার পাশাপাশি ঘুমের একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করা প্রয়োজন।

উদাহরণস্বরূপ, প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠা ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক।

তাহলে, এই স্নুজ বাটন ব্যবহারের অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী?

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, ঘুমের সময়টিকে আরও সুনিয়ন্ত্রিত করা এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করা।

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে কিছু ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে, যা দিনের শুরুটা আরও সুন্দর করে তুলবে।

যেমন – হালকা ব্যায়াম করা, সকালের নাস্তা তৈরি করা অথবা দিনের পরিকল্পনা করা যেতে পারে।

ড. রবিন্স আরও বলেন, “যদি সম্ভব হয়, তাহলে আমাদের অ্যালার্মের ওপর নির্ভর করতে না হয়ে যেন আমরা স্বাভাবিকভাবে ঘুম থেকে উঠতে পারি, তবে সেটাই সবচেয়ে ভালো।

তিনি আরও যোগ করেন, রাতের বেলা ঘুমানোর আগে যেমন কিছু নিয়ম মেনে চলা হয়, তেমনি দিনের শুরুতেও কিছু ভালো অভ্যাস তৈরি করা যেতে পারে।

সকালের আলো শরীরে পড়লে তা ঘুম থেকে জাগতে সাহায্য করে।

তাই, দিনের আলো আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করা যেতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *