আতঙ্কের মুক্তি! অবশেষে জেল থেকে মুক্তি পেলেন টমি রবিনসন!

যুক্তরাজ্যের বিতর্কিত ডানপন্থী ব্যক্তিত্ব টমি রবিনসনকে (আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলে-লেনন) আদালত অবমাননার দায়ে কারাদণ্ডের মেয়াদ কমানোর পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার, বাকিংহামশায়ারের এইচএমপি উডহিল কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।

আদালতের শুনানিতে তার ১৮ মাসের কারাদণ্ডের মেয়াদ চার মাস কমানো হয়।

২০২৪ সালের অক্টোবরে, ৪২ বছর বয়সী রবিনসনকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অভিযোগে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল। তিনি সিরিয়ার এক স্কুলছাত্র সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছিলেন।

২০১৭ সালে হাডার্সফিল্ডে ওই ছাত্রের ওপর হামলার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর রবিনসন অনলাইনে মানহানিকর মন্তব্য করেন। এই ঘটনার জেরে তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ লক্ষ পাউন্ড পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

কারা মুক্তির পর রবিনসন তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে প্রায় ২০ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা দেন। যেখানে তাকে লম্বা চুল ও এক ধরনের রুদ্রাক্ষের মালা পরে থাকতে দেখা যায়।

তিনি তার মুক্তি চেয়ে প্রচারণার জন্য মার্কিন বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ককে ধন্যবাদ জানান এবং ব্রিটিশ সরকারের সমালোচনা করেন।

আদালতে শুনানিতে জানানো হয়, রবিনসন আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে ‘সাইলেন্সড’ নামে একটি চলচ্চিত্র প্রচার করেছিলেন এবং গত বছর লন্ডনে এক সমাবেশে সেটি প্রদর্শন করেন।

যদিও বিচারপতি জনসন তার মুক্তির সময় রবিনসনের অনুশোচনার অভাবের কথা উল্লেখ করেছিলেন, তবে তিনি পরে তার আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন। বিচারপতি আরও বলেন, ভবিষ্যতে তিনি এই ধরনের কোনো কাজ করবেন না বলে আদালতকে নিশ্চিত করেছেন।

এই মামলার বাদী ছিলেন সলিসিটর জেনারেল। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে রবিনসন ইচ্ছাকৃতভাবে চলচ্চিত্রটির অনুমোদন ও বিতরণের মাধ্যমে এবং ২০২৩ সালে একাধিক সাক্ষাৎকারে একই অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন।

আদালত রবিনসনের সাজা কমালেও বিচারপতি জনসন সতর্ক করে বলেছেন, ভবিষ্যতে যদি তিনি আবার কোনো নিয়ম ভঙ্গ করেন, তবে তাকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।

টমি রবিনসন যুক্তরাজ্যে একজন বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত, যিনি অভিবাসনবিরোধী এবং ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্যের জন্য সমালোচিত হন।

অতীতে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে বহুবার আইনগত জটিলতা তৈরি হয়েছে। এই ঘটনার সূত্র ধরে, ধারণা করা হয় যে তিনি ২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে খারাপ দাঙ্গায় ইন্ধন জুগিয়েছিলেন। যদিও রবিনসন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *