মদ পানের পর বন্ধু হারানো নারীর আর্তনাদ: ‘দম বন্ধ হয়ে আসছিল!’

**লাওসে বিষাক্ত মদ পানে ব্রিটিশ তরুণীর মৃত্যু, বন্ধু সচেতনতা প্রচারে**

লাওসে ছুটি কাটাতে যাওয়া এক ব্রিটিশ তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জানা গেছে, সম্ভবত মিথানল মেশানো মদ পান করার কারণে ২৮ বছর বয়সী সিমোন হোয়াইট নামের ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।

নভেম্বরের শুরুতে বন্ধু বেথানি ক্লার্কের সঙ্গে লাওসে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। খবর অনুযায়ী, তাঁরা একটি হোস্টেলে বিনামূল্যে পরিবেশিত কিছু ভদকা পান করেছিলেন। এর পরেই ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।

বেথানির ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন তাঁরা হোস্টেলের “হ্যাপি আওয়ার”-এ বিনামূল্যে পাওয়া ভদকা পান করেন। পানীয়টি তেমন কড়া ছিল না, বরং জলের মতো স্বাদ ছিল। প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন হয়তো কম দামের কারণে এমনটা হয়েছে।

ঘটনার পরদিন তাঁরা অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। বমি এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর তাঁদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাঁদের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে।

শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার পর দ্রুত তাঁদের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, সিমোনের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হলেও তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি।

কোমাতেই ছিলেন তিনি। এরপর ২১ নভেম্বর তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয় এবং তাঁর মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার পর, বেথানি “মিথানল অ্যাওয়ারনেস ফর সিমোন হোয়াইট” নামে একটি প্রচারণা শুরু করেছেন, যার মূল উদ্দেশ্য হলো এই ধরনের বিষাক্ত পানীয় সম্পর্কে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা।

তিনি তাঁর বন্ধুকে স্মরণ করে বলেন, “সিমোন সবসময় হাসিখুশি থাকত এবং অন্যদের গুরুত্বপূর্ণ অনুভব করাতো।”

জানা গেছে, শুধু সিমোনই নন, এই ঘটনায় আরও কয়েকজন বিদেশি পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন আমেরিকান, দুইজন ডেনিশ এবং একজন অস্ট্রেলিয়ান তরুণীও ছিলেন।

এই ঘটনার পর হোস্টেল মালিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হলেও, তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। মালিক জানিয়েছেন, তাঁর হোস্টেলে পরিবেশিত পানীয়ের সঙ্গে এই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিথানল একটি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ যা অনেক সময় অবৈধভাবে মদে মেশানো হয়, বিশেষ করে অ্যালকোহলের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য। মিথানল পানের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণ অ্যালকোহল পানের মতোই হতে পারে, যেমন— বমি, মাথা ঘোরা, চেতনা হারানো ইত্যাদি।

তবে এর ফল মারাত্মক হতে পারে। দ্রুত হৃদস্পন্দন অথবা শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং অনেক সময় মৃত্যুও হতে পারে।

বিদেশ ভ্রমণে গেলে খাবার এবং পানীয়ের ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বিশেষ করে, যেখানে-সেখানে মদ পানের আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে তা নিরাপদ কিনা।

কোনো সন্দেহ হলে, সেই পানীয় ত্যাগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *