ব্রুস উইলিসের রোগ: দুঃস্বপ্নের মতো ভবিষ্যৎ, ভেঙে গেল সব!

বিখ্যাত হলিউড অভিনেতা ব্রুস উইলিসের ‘ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া’ (এফটিডি)-তে আক্রান্ত হওয়ার পর, তাঁর স্ত্রী এমা হেমিং উইলিসের জীবন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। ২০২২ সালে রোগ নির্ণয়ের পর, তাঁদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো যেনো চোখের সামনে থেকেই অদৃশ্য হয়ে যায়।

সম্প্রতি এক ফোরামে এমা তাঁর এই কঠিন অভিজ্ঞতার কথা জানান।

ডাক্তারের চেম্বার থেকে একটি লিফলেট হাতে বেরিয়ে আসার পর তাঁদের আর কোনো পথ ছিল না, ছিলো শুধু একরাশ হতাশা।

কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই, ব্রুস উইলিসের দেখাশোনার দায়িত্ব এসে পরে এমার কাঁধে। একদিকে ভালোবাসার মানুষটির যত্ন, অন্যদিকে দুই মেয়ের দেখাশোনা—সবকিছু সামলাতে গিয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন।

এফটিডি, যা সাধারণত ৬০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, এর কোনো চিকিৎসা নেই। এই রোগের কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি, আচরণ এবং ভাষার পরিবর্তন হতে থাকে।

শুরুতে এমা নিজেকে একা এবং অসহায় মনে করতেন।

তিনি বলেন, “তখন আমার প্রয়োজন ছিল এমন কেউ, যিনি আমাকে বলবেন, ‘এই মুহূর্তে বিষয়টি কঠিন মনে হলেও, তুমি ঠিক পথ খুঁজে পাবে। তুমি অবশ্যই এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসবে এবং আরও শক্তিশালী হবে।”

এই কঠিন সময়ে, এমা হাল ছাড়েননি। তিনি এফটিডি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য গবেষণা শুরু করেন।

তাঁর অভিজ্ঞতা এবং অন্যদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে, তিনি একটি বই লিখছেন, যার নাম ‘দ্য আনএক্সপেক্টেড জার্নি’। এই বইটিতে তিনি তুলে ধরেছেন, কীভাবে একজন পরিচর্যাকারী হিসেবে তিনি ব্রুসের পাশে ছিলেন এবং এই রোগ সম্পর্কে অন্যদের সচেতন করেছেন।

এমা জানান, ব্রুসের পরিচিতির কারণে তিনি বিশ্বমানের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা পেয়েছেন, যা অনেকের কাছে সহজলভ্য নয়।

তাই তিনি এই তথ্যগুলো সবার সাথে শেয়ার করতে চান। গত তিন বছর ধরে, তিনি এফটিডি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং আইন প্রণয়নেও সমর্থন জুগিয়েছেন।

আলোচনা সভায় মারিয়া শ্রাইভার, যিনি দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছেন, তিনি মনে করেন, পরিচর্যা বিষয়টি একটি জাতীয় ইস্যু হিসেবে দেখা উচিত।

তাঁর মতে, “পরিচর্যা অথবা নারী স্বাস্থ্য—এই বিষয়গুলো কেন আমাদের আলোচনার প্রধান বিষয় নয়? কেন আমরা এগুলো সহজভাবে সমাধান করতে পারছি না? আমাদের সবারই এই বিষয়ে একমত হওয়া উচিত। কারণ, প্রতিটি পরিবার কোনো না কোনোভাবে এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।”

এমা আরও যোগ করেন, “আমাদের এই বিষয়ে আরও বেশি কথা বলা উচিত, কারণ কোনো না কোনো সময়ে আমরা আমাদের প্রিয়জনের দেখাশোনা করব অথবা আমাদের নিজেদেরও পরিচর্যার প্রয়োজন হবে। তাই, এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাটি একদিন সরকার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।”

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *