হলিউডের অভিনেতা কেভিন কস্টনারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন একজন নারী।
‘হরাইজন: অ্যান আমেরিকান সাগা – চ্যাপ্টার ২’ সিনেমার একজন স্টান্ট পারফর্মার ডেভন লাবেলা, কস্টনারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছেন।
জানা গেছে, সিনেমার শুটিং সেটে একটি অপ্রত্যাশিত ধর্ষণের দৃশ্যে অভিনয় করতে বাধ্য করা হয়েছিল তাকে।
ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির সুপিরিয়র কোর্টে দায়ের করা অভিযোগে লাবেলা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে সিনেমাটির শুটিংয়ের সময় কেভিন কস্টনারের নির্দেশনায় একটি সহিংস, পূর্ব-পরিকল্পনাহীন এবং অনির্ধারিত ধর্ষণের দৃশ্যে তাকে অভিনয় করতে হয়।
তিনি এই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন এবং বিচার চেয়েছেন জুরি বোর্ডের মাধ্যমে।
অভিযোগে আরও জানানো হয়েছে, লাবেলা ‘হরাইজন ২’ সিনেমার প্রধান অভিনেত্রী এলা হান্টের হয়ে একজন স্টান্ট ডাবল হিসেবে কাজ করতেন।
তার কাজ ছিল হান্টের শারীরিক দৃশ্যে অভিনয় করা, যার মধ্যে স্টান্ট করাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সিনেমা অভিনেতাদের সংগঠন ‘স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড’ (এসএজি)-এর নিয়ম অনুযায়ী, কোনো অভিনেতা বা অভিনেত্রীকে আগে থেকে অবহিত না করে, এমনকি তার সম্মতি ছাড়া কোনো অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় করতে বাধ্য করা যায় না।
লাবেলার অভিযোগ, সিনেমার শুটিংয়ের কয়েক সপ্তাহ পর তাকে বলা হয়, একটি দৃশ্যে হান্টের পরিবর্তে তাকে অভিনয় করতে হবে।
দৃশ্যটি ছিল, হান্টের চরিত্র জুলি এবং অভিনেতা ডগলাস স্মিথের চরিত্রের মধ্যে একটি ‘আগ্রাসী এবং অন্তরঙ্গ ধর্ষণের দৃশ্য’।
লাবেলার ভাষ্যমতে, দৃশ্যটি ছিল অপ্রত্যাশিত এবং চিত্রনাট্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না।
২০২৩ সালের ১ মে দৃশ্যটি ধারণ করা হয় এবং একাধিকবার শুটিংয়ের পর কোনো সমস্যা ছাড়াই তা শেষ হয়।
পরের দিন, অর্থাৎ ২ মে, লাবেলা হান্টের স্টান্ট ডাবল হিসেবে একটি সাধারণ দৃশ্যের শুটিংয়ে অংশ নেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, সে সময় কস্টনার সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর এক অভিনেতা রজার ইভান্সকে নির্দেশ দেন, হান্টের (যিনি তখন সেটে ছিলেন না) উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তার পোশাক ছিঁড়তে।
লাবেলার দাবি, এই দৃশ্যটি সেদিনের শুটিংয়ের তালিকায় ছিল না।
লাবেলা আরও জানান, হান্ট সেট থেকে চলে যাওয়ার পর, কস্টনার তাকে ওই দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য রাজি করাতে চেষ্টা করেন, যেখানে কোনো পূর্ব প্রস্তুতি, সম্মতি বা নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না।
লাবেলা জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি ওই দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য কোনো সম্মতি দেননি।
এদিকে, কস্টনারের আইনজীবী মার্টিন সিঙ্গার লাবেলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, কস্টনার সবসময় সেটের সবার স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে চান এবং সেফটির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন।
তিনি লাবেলাকে একজন ‘সিরিয়াল অভিযুক্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, তার অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
আইনজীবীর দাবি, লাবেলা নিজেই দৃশ্যটি অনুমোদন করেছিলেন এবং শুটিংয়ের রাতে তিনি বেশ হাসিখুশি ছিলেন।
এই ঘটনার জেরে ডেভন লাবেলা মানসিক আঘাত পেয়েছেন এবং তার কর্মজীবনেও এর প্রভাব পড়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ট্রমার শিকার হয়েছেন এবং এখনো তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।
লাবেলার আইনজীবী জেমস এ. ভ্যাগনিনি এই মামলাকে হলিউডে নারীদের প্রতি বিদ্যমান যৌন হয়রানির একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
অন্যদিকে, কস্টনারের আইনজীবী বলেছেন, তারা আত্মবিশ্বাসী যে কস্টনার জয়ী হবেন।
বর্তমানে, এই মামলার আইনি কার্যক্রম চলছে।
তথ্য সূত্র: পিপল
