চুলের সেলুন: ক্যামেরার চোখে লুকানো সৌন্দর্য, যা মুগ্ধ করবে!

শিরোনাম: লন্ডনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী: রূপচর্চা, আত্মপরিচয় ও ক্যামেরার চোখে ভিন্নতা

আলোচনার জগৎে “দৃশ্যমান হওয়া”র ধারণাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে দেখা, যেন তার অস্তিত্বের প্রমাণ।

লন্ডনের ‘অটোগ্রাফ’ গ্যালারিতে বর্তমানে চলছে দুটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী, যেখানে এই ‘দেখা’ এবং ‘দেখানো’র জটিলতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এই প্রদর্শনীগুলোতে আলোকচিত্রী আইলিন পেরিয়ার এবং ডায়ান মিনিকুচি-র কাজ দর্শকদের জন্য উন্মোচন করা হয়েছে।

আইলিন পেরিয়ারের “এ থাউজেন্ড স্মল স্টোরিজ” (A Thousand Small Stories) প্রদর্শনীতে গত ৩০ বছরের কাজের একটি চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পেরিয়ার বিভিন্ন সময়ে অস্থায়ী স্টুডিও তৈরি করেছেন – বাড়ি, সেলুন, এমনকি রাস্তার পাশেও।

তাঁর ক্যামেরার লেন্স সবসময়ই সমাজের ভিন্ন ভিন্ন মানুষের প্রতিচ্ছবি ধারণ করেছে, যেখানে সৌন্দর্য্যের একটি নতুন সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায়।

এই সিরিজে তিনি মূলত সাধারণ মানুষের প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন, যেখানে প্রচলিত সৌন্দর্যের ধারণার বাইরে গিয়েও সৌন্দর্যের অনুসন্ধান করেছেন। পেরিয়ারের ছবিগুলো দর্শকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে, কারণ তিনি তথাকথিত সুন্দর চেহারার বাইরেও মানুষের ভেতরের সৌন্দর্যকে তুলে ধরতে চেয়েছেন।

পেরিয়ারের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বিভিন্ন প্রজন্মের ব্রিটিশ-ঘানার নারীদের ছবি, যেখানে তাঁদের আত্মবিশ্বাস ও স্টাইলের ঝলক দেখা যায়।

অন্যদিকে, ডায়ান মিনিকুচি-র “বিলংগিং অ্যান্ড বিয়ন্ড” (Belonging and Beyond) প্রদর্শনীতে একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারীর আত্ম-পরিচয় অনুসন্ধানের গল্প বলা হয়েছে।

মিনিকুচি মূলত শ্বেতাঙ্গ সৌন্দর্যের ধারণার প্রভাব থেকে নিজের মুক্তি এবং আত্ম-অনুসন্ধানের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

নিজের প্রতিকৃতি তোলার ক্ষেত্রে তিনি ক্যামেরার সামনে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না, তবে এই প্রদর্শনীতে তিনি তাঁর ভেতরের দ্বিধাগুলো ভেঙে ছবি তোলার চেষ্টা করেছেন।

টমাস ট্যালিস স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে, তিনি এই প্রতিকৃতিগুলো তৈরি করেছেন।

লেসনেস অ্যাবে উড্‌স-এ তোলা তাঁর কিছু সাদাকালো ছবিতে, নিজেকে উপস্থাপন করার দ্বিধা এবং আত্ম-সচেতনতা ফুটে উঠেছে।

এই প্রদর্শনীগুলো, বিশেষ করে পেরিয়ারের কাজ, আলোকচিত্রের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছে।

এটি প্রমাণ করে যে সৌন্দর্য একটি বহুমাত্রিক ধারণা, যা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। এই প্রদর্শনীগুলো আমাদের আত্ম-পরিচয়, সৌন্দর্য এবং সমাজের চোখে নিজেদের উপস্থাপন করার বিষয়ে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *