শীর্ষক: ঐশ্বর্যের দেশে ক্ষুধার্ত মুখ: যুক্তরাজ্যের বৈচিত্র্য ক্যামেরাবন্দী করলেন ইথিওপীয় শিল্পী আইদা মুলুনেহ
বহু সংস্কৃতির দেশ যুক্তরাজ্যে ক্যামেরার লেন্স নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ইথিওপীয় শিল্পী আইদা মুলুনেহ। ব্র্যাডফোর্ড, বেলফাস্ট, কার্ডিফ এবং গ্লাসগো শহরে ঘুরে তিনি তুলে এনেছেন সমাজের নানা দিক।
তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে লিঙ্গ বৈষম্য, শ্রমিক শ্রেণির জীবন, ধর্ম, অভিবাসন এবং শিল্প-কারখানার অবনতির মতো বিষয়গুলো। “দ্য নেসেসিটি অফ সিং” (The Necessity of Seeing) শিরোনামের এই প্রদর্শনীতে যুক্তরাজ্যের জটিলতা এবং বিভিন্নতার প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি।
ছোটবেলায় আইদা মুলুনেহ বিভিন্ন দেশে ঘুরেছেন। ইথিওপিয়ায় জন্ম নেওয়া এই শিল্পী ইয়েমেন, সাইপ্রাস, কানাডা এবং ইংল্যান্ডেও ছিলেন কিছুকাল। যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতি এবং সমাজের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় ঘটেছিল শৈশবে, যখন তিনি আট মাসের জন্য সানডারল্যান্ডে ছিলেন।
এই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে আইদা জানান, “যুক্তরাজ্যের ইতিহাস এবং সমসাময়িক জীবন সম্পর্কে যেন আমি একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা পেলাম।” তাঁর তোলা ছবিগুলোতে পুরনো দিনের ক্ষত এবং বর্তমানের সংগ্রামগুলো স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
শিল্পীর ভাষায়, “আমি বিদ্যমান বাস্তবতার মধ্যে নিজের জগৎ তৈরি করছি এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমার অনুভূতির প্রতিফলন ঘটাচ্ছি।”
প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে একটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। “দ্য হ্যান্ডমেইড অফ হাঙ্গার” (The Handmaid of Hunger) শিরোনামের ছবিতে যুক্তরাজ্যের মতো একটি ধনী দেশেও খাদ্য–সংকটে ভোগা মানুষের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে।
আইদার মতে, আফ্রিকার অনেক মানুষের কাছে যুক্তরাজ্যের এই চিত্রটি একটি অচিন্তনীয় বিষয়।
এছাড়াও, ব্র্যাডফোর্ডে মুসলিম সংস্কৃতির শক্তিশালী প্রভাব দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন। সেখানকার একটি মেয়ের হিজাব পরে স্কুলে স্বাচ্ছন্দ্যে যাওয়ার গল্পটি তাঁকে গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়।
বেলফাস্ট শহরের দেওয়ালে অতীতের আঘাতের চিহ্নগুলো যেন আজও স্পষ্ট, যা তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। গ্লাসগোতে চার্লস রেনি ম্যাকিনটোশের স্থাপত্যশৈলীও তাঁর ছবিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
আইদা মুলুনেহর এই প্রদর্শনীটি ব্র্যাডফোর্ড সিটি অফ কালচার ২০২৫ এবং ইমপ্রেশনস গ্যালারির যৌথ উদ্যোগে হয়েছে। বেলফাস্ট এক্সপোজড, ফটো গ্যালারি, কার্ডিফ এবং স্ট্রিট লেভেল ফটোওয়ার্কস, গ্লাসগো এই আয়োজনে সহায়তা করেছে।
প্রদর্শনীটি ৫ই জুন থেকে ১৮ই জানুয়ারী পর্যন্ত চলবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান