শিরোনাম: শাই গিলজিয়াস-আলেকজান্ডার: বাস্কেটবলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি ইতিহাস গড়তে প্রস্তুত
খেলার জগৎ সবসময়ই তারকার জন্ম দেয়, আর সেই তারকাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের অসাধারণত্ব দিয়ে ইতিহাসে জায়গা করে নেন। সেই রকমই একজন বাস্কেটবল খেলোয়াড় হলেন শাই গিলজিয়াস-আলেকজান্ডার।
ওকলাহোমা সিটি থান্ডারের হয়ে খেলা ২৬ বছর বয়সী এই তরুণ যেন বাস্কেটবলের দুনিয়ায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। তাঁর খেলার ধরন এবং মাঠের পারফরম্যান্স এতটাই মুগ্ধকর যে, অনেকেই তাঁকে কিংবদন্তিদের সারিতে ফেলছেন।
চলতি মৌসুমে শাইয়ের খেলা দেখে বাস্কেটবলপ্রেমীরা রীতিমতো বিস্মিত। পরিসংখ্যান বলছে, তিনি যেন এক অবিশ্বাস্য ফর্মে রয়েছেন।
এই মুহূর্তে, তাঁর স্কোরিংয়ের গড় এতটাই বেশি যে, তা কিংবদন্তি খেলোয়াড় শ্যাকুইল ও’নিল, মাইকেল জর্ডান এবং কারিম আব্দুল-জাব্বার-এর মতো তারকাদের সঙ্গেই তুলনীয়। শুধু স্কোরিং-এ নয়, খেলার প্রতিরক্ষা অংশেও তিনি সমান পারদর্শীতা দেখাচ্ছেন।
এনবিএ ফাইনালের প্রথম দুই ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ছিল ৭২ পয়েন্ট, যা ফাইনালের ইতিহাসে প্রথম দুই ম্যাচে কোনো খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। প্রতিটি ম্যাচেই তিনি ৩০-এর বেশি পয়েন্ট অর্জন করেছেন।
তাঁর এই অসাধারণ পারফরম্যান্স প্রমাণ করে, কেন তিনি এত দ্রুত সকলের মন জয় করেছেন। বাস্কেটবলের বিশ্লেষকদের মতে, শাইয়ের খেলার ধরন খুবই সাবলীল, যা প্রতিপক্ষের জন্য এক দুর্বোধ্য ধাঁধা।
শাই শুধু একজন অসাধারণ স্কোরার নন, বরং তিনি একজন নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডারও। ফাইনাল সিরিজে ইতিমধ্যে তাঁর ৭টি স্টিল (steals) রয়েছে, যা প্রমাণ করে খেলার দুই দিকেই তিনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
তাঁর কোচ মার্ক ডেইগনল্ট মনে করেন, শাইয়ের এই উন্নতি খুবই স্বাভাবিক এবং তিনি প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগাতে জানেন।
এই মরসুমে শাইয়ের অসাধারণ ফর্ম শুধু ফাইনালের মঞ্চেই সীমাবদ্ধ নয়। সারা বছর জুড়েই তিনি দুর্দান্ত খেলেছেন।
নিয়মিত মৌসুম এবং প্লে-অফ মিলিয়ে তিনি ৩,০০০-এর বেশি পয়েন্ট অর্জন করেছেন, যা বাস্কেটবলের ইতিহাসে বিরল। এর আগে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন মাইকেল জর্ডান, উইল্ট চেম্বারলেইন এবং কোবি ব্রায়ান্টের মতো কিংবদন্তি খেলোয়াড়েরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শাইয়ের নেতৃত্বে ওকলাহোমা সিটি থান্ডার দল চ্যাম্পিয়নশিপের খুব কাছেই রয়েছে। এই দলের অন্য খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন ২৪ বছর বয়সী জ্যালেন উইলিয়ামস এবং ২৩ বছর বয়সী চেট হলমগ্রেন।
তাঁরুণ্যের প্রতীক এই দলটি যদি চ্যাম্পিয়ন হতে পারে, তাহলে তা শাই গিলজিয়াস-আলেকজান্ডারের ক্যারিয়ারের এক দারুণ স্বীকৃতি হবে এবং বাস্কেটবলের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হবে।
যদি শাই তাঁর এই যাত্রা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারেন, তবে তা শুধু তাঁর ব্যক্তিগত সাফল্যের গল্প হবে না, বরং বাস্কেটবলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা একটি মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন