যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বিষয়ক ধরপাকড় অভিযান নিয়ে প্রতিবাদ, বাড়ছে বিক্ষোভের ঢেউ।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ধরপাকড় অভিযানের প্রতিবাদে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষীবাহিনী (ন্যাশনাল গার্ড) ও মেরিন সেনাদের মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন।
দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার। অনেক স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ চললেও, কিছু কিছু জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশের ধরপাকড়ে ইতোমধ্যে কয়েকশ’ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। তবে, ঠিক কতজন সদস্যকে পাঠানো হচ্ছে এবং তাদের দায়িত্ব কি হবে, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছে, তারা আগামী দিনগুলোতে আরও বড় ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের সামরিক কুচকাওয়াজের দিনটিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ‘নো কিংস’ নামে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
বিভিন্ন শহর থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সিয়াটলে ফেডারেল আদালত ভবনের সামনে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা ‘আইসিই নিপাত যাক’ লেখা ব্যানার নিয়ে আসে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।
নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনের একটি আইসিই অফিসের সামনে বিক্ষোভকালে পুলিশ প্রায় ৮০ জনের বেশি মানুষকে আটক করেছে। বিক্ষোভকারীরা ‘আইসিই আউট অফ নিউইয়র্ক সিটি’ স্লোগান দেয় এবং ব্যানার প্রদর্শন করে। নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা তিশ জানান, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অধিকাংশই শান্তিপূর্ণ ছিল, তবে কিছু বিক্ষোভকারীর কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে, সান আন্তোনিওতে সিটি হলের বাইরে প্রায় চার শতাধিক মানুষ আইসিই-বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিক্ষোভটি মূলত শান্তিপূর্ণ ছিল, যেখানে সঙ্গীত পরিবেশন করা হয় এবং জল বিতরণ করা হয়। এছাড়া ফিলাডেলফিয়া ও সান ফ্রান্সিসকোতেও বিক্ষোভ হয়েছে। ফিলাডেলফিয়ায় বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সান ফ্রান্সিসকোতে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভবনে ভাঙচুর চালায়।
শিকাগো ও ডেনভারেও বিক্ষোভ হয়েছে এবং পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। স্পোকানে মেয়র লিসা ব্রাউন শহরের কিছু অংশে কারফিউ জারি করেছেন। স্পোকানে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ‘পেপার বল’ ব্যবহার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন জানিয়েছে, তারা অভিবাসন বিষয়ক ধরপাকড় অভিযান অব্যাহত রাখবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস