যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর একটি বাণিজ্য চুক্তির কাঠামো চূড়ান্ত হয়েছে। সম্প্রতি লন্ডনে অনুষ্ঠিত হওয়া বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে এই চুক্তিটি হয়।
বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড ল্যাটনিক জানিয়েছেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দলকে আগ্রাসী অবস্থান থেকে সরে আসার অনুমতি দিয়েছিলেন।
আলোচনা প্রসঙ্গে ল্যাটনিক জানান, চীনের পক্ষ থেকে বিরল-ধাতু চুম্বকের সরবরাহ বিলম্বিত করা হলে, যুক্তরাষ্ট্রও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। তিনি বলেন উভয় দেশই একে অপরের প্রতি তাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
আলোচনার সময় কোনো চিৎকার বা হট্টগোল হয়নি, তবে উভয় পক্ষই মনে করে এই চুক্তির ফল তাদের জন্য লাভজনক হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, চীন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো কোম্পানির বিরল-ধাতু চুম্বক ব্যবহারের লাইসেন্স দ্রুত অনুমোদন করতে রাজি হয়েছে। এই চুম্বকগুলি ইলেকট্রনিক্স, গাড়ি, এমআরআই স্ক্যান এবং জেট ইঞ্জিনের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রও কিছু রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করবে, যেমন—চীনকে ইথেন সরবরাহ করা হবে। ইথেন প্লাস্টিক তৈরির প্রধান উপাদান।
ল্যাটনিক আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দল এখন অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। খুব সম্ভবত আগামী সপ্তাহ থেকেই নতুন চুক্তিগুলো আসতে শুরু করবে।
তিনি বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভালো চুক্তির বিষয়ে জোর দেন, যা আমেরিকান ব্যবসা এবং ভোক্তাদের জন্য উপকারী হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং বিদেশি বাজারে মার্কিন পণ্য প্রবেশ সহজ করতে এই চুক্তিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ল্যাটনিক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো রপ্তানি বৃদ্ধি করা এবং ১.২ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করা।
এই চুক্তির ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে এবং এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়তে পারে। কারণ, বিশ্ব বাণিজ্য পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানিতেও পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নীতি পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের চুক্তি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক।
তথ্যসূত্র: সিএনএন