অস্ট্রিয়ার গ্রাজ শহরে একটি স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন কিশোর বয়সী শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার দিনের এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো দেশ। অস্ট্রিয়ার ইতিহাসে এটি অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী ২১ বছর বয়সী এক ব্যক্তি, যিনি পূর্বে ওই স্কুলে পড়াশোনা করতেন। তিনি দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেন এবং পরে নিজেকেও গুলি করে হত্যা করেন।
নিহতদের মধ্যে ৯ জন শিক্ষার্থী এবং একজন শিক্ষক ছিলেন। আহত হয়েছেন আরও ১২ জন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
ঘটনার পর অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর ক্রিস্টিয়ান স্টোকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। শোকবার্তায় তিনি লেখেন, “এই শোক ও দুঃখ প্রকাশ করার মতো কোনো ভাষা নেই।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোট ও একটি নিষ্ক্রিয় পাইপ বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। তারা এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছেন।
স্থানীয় সময় সকাল দশটায় গ্রাজের একটি স্কুলে গুলির খবর পাওয়ার পরেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। দ্রুত স্কুলটি খালি করা হয় এবং এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে একজন ১৭ বছর বয়সী ফরাসি শিক্ষার্থীও ছিল। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন дер লেয়েন এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
গ্রাজের মেয়র এলকে কাহর জানান, এই ঘটনায় শোকাহত পরিবারের সদস্যদের জন্য কোনো সান্ত্বনার ভাষা নেই। তিনি বলেন, “স্কুলে প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী ছিল। তাদের অভিভাবকদের জন্য এটা ছিল এক বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা।”
সাধারণত মধ্য ইউরোপের দেশগুলোতে বন্দুক হামলার ঘটনা বিরল। ২০১৮ সালের এক হিসাব অনুযায়ী, প্রতি এক লক্ষে ০.১ জন বন্দুক হামলায় নিহত হন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে এই সংখ্যা ছিল ৪.৫।
তবে অস্ট্রিয়াতে অন্যান্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর তুলনায় বেসামরিক নাগরিকদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকানা বেশি।
এই ঘটনার পর গ্রাজে নিহতদের স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শোকাহত মানুষেরা মোমবাতি হাতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন
