ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে এক নারীর হত্যাকাণ্ডের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়া এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পথ পরিষ্কার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত বুধবার এই রায় দিয়েছে।
১৯৯৯ সালে টুলসা শহরের এক নারীকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ৬১ বছর বয়সী জন ফিটজেরাল্ড হ্যানসনকে বৃহস্পতিবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা ছিল।
তবে, রাজ্যের প্যারোল ও পারোল বোর্ডের শুনানিতে ন্যায্যতার অভাব ছিল – এমন যুক্তিতে হ্যানসনের আইনজীবীরা আপত্তি জানালে, স্থানীয় একটি আদালত মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের নির্দেশ দেয়।
ওকলাহোমার ক্রিমিনাল আপিল আদালত সেই স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
হ্যানসনের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, ক্ষমা প্রার্থনার শুনানিতে বোর্ডের একজন সদস্যের কারণে ত্রুটি ছিল। কারণ ওই সদস্য এক সময় হ্যানসনের মামলা পরিচালনাকারী জেলা অ্যাটর্নি অফিসের সঙ্গে কাজ করতেন।
যদিও ওকলাহোমার অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় জানায়, জেলা আদালতের বিচারকের মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের নির্দেশ দেওয়ার কোনো এখতিয়ার ছিল না।
আদালত তার আদেশে জানায়, জেলা আদালতের বিচারকের এই ধরনের নির্দেশ দেওয়ার কোনো অধিকার ছিল না। এমনকি যদি ধরেও নেওয়া হয় তার অধিকার ছিল, তারপরও এই পদক্ষেপ ছিল ‘অত্যন্ত কঠোর ও অনাকাঙ্ক্ষিত’।
কারণ বোর্ডের ওই সদস্যের ভোট গণনা না হলেও, ক্ষমা সুপারিশ করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকত না।
হ্যানসনের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ওকলাহোমা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার পরিকল্পনা করছেন।
আইনজীবী এমা রোলস এক বিবৃতিতে বলেন, “মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তির এমন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীর সামনে ক্ষমার আবেদন করতে হওয়া উচিত নয়, যাঁর সঙ্গে সরাসরি তাঁর মামলার যোগসূত্র রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “এই মামলা ওকলাহোমার ক্ষমা প্রার্থনার প্রক্রিয়া এবং একটি নিরপেক্ষ শুনানির প্রতিশ্রুতি রক্ষার বিষয়।
আদালতে এই মামলার শুনানি চলাকালীন জানা যায়, হ্যানসনের বিরুদ্ধে আরও একটি আপিল বিচারাধীন রয়েছে।
যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রসিকিউটররা তাঁর প্রতিরক্ষা দলের কাছে একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর বিষয়ে তথ্য গোপন করেছিলেন।
উল্লেখ্য, জন ফিটজেরাল্ড হ্যানসনকে মেরী বোলেস নামের এক নারীকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
এরপর টুলসা কাউন্টিতে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, হ্যানসন ও তাঁর এক সহযোগী একটি শপিং মল থেকে ওই নারীকে অপহরণ করে।
এর আগে হ্যানসন ফেডারেল কারাগারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন।
তবে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে তাঁর ওকলাহোমায় স্থানান্তরের ব্যবস্থা করেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন