মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফ্লাইটে এক ব্যক্তির কানে হারিয়ে যাওয়া ইয়ারফোন খুঁজে বের করার জন্য অন্য এক যাত্রীকে মাথায় থাপ্পড় মারার ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে একটি ‘রেড-আই’ ফ্লাইটে, অর্থাৎ গভীর রাতের ফ্লাইটে।
জানা গেছে, পোর্টল্যান্ড, ওরেগন থেকে নিউ ইয়র্কের নিউআর্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা একটি ফ্লাইটে এই ঘটনা ঘটে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি পোস্টে এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন ভুক্তভোগী যাত্রী। তিনি জানান, বিমানের প্রথম শ্রেণীর এক যাত্রী তাঁর সিটের পেছনের যাত্রীকে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য কয়েকবার তাঁর মাথায় থাপ্পড় মারেন।
কারণ ছিল, ওই যাত্রী তাঁর একটি ইয়ারফোন খুঁজে পাচ্ছিলেন না। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, ইয়ারফোনটি পাওয়ার পরও তিনি আবার ওই যাত্রীকে থাপ্পড় মারেন, শুধু জানানোর জন্য যে তিনি সেটি খুঁজে পেয়েছেন।
ভুক্তভোগী যাত্রী তাঁর পোস্টে লেখেন, “একজন মানুষ কিভাবে অন্যকে স্পর্শ করার অনুমতি পায়?” এই ঘটনায় অনেকেই তাঁদের প্রতিক্রিয়ায় ওই যাত্রীর ধৈর্য্যের প্রশংসা করেছেন।
বিমানযাত্রীদের এমন অসদাচরণ বা বিশৃঙ্খলার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা (আইএটিএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি এমন ঘটনা ঘটেছে।
যেখানে ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল ২৪ হাজারের কাছাকাছি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই, ২০২১ সাল থেকে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) ৩০০ জনের বেশি যাত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে, যা এফবিআইয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এইসব অভিযোগের মধ্যে ছিল সহযাত্রী, ক্রু সদস্য এবং অন্যান্যদের উপর শারীরিক আক্রমণ ও আক্রমণাত্মক আচরণ।
যাত্রীদের এই ধরনের বিশৃঙ্খলা রোধ করতে এফএএ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, এই ধরনের ঘটনার জন্য বড় অংকের জরিমানা এবং ফ্লাইট করার সুযোগ বাতিল করা।
জানা গেছে, এই ধরনের অপরাধের জন্য প্রায় ৩৭ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪১ লক্ষ টাকার সমান। (ডলারের দামের তারতম্যের কারণে এই অংক পরিবর্তন হতে পারে)।
ফ্লাইটে যাত্রীদের এমন আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং উদ্বেগের বিষয়। আমাদের দেশেও মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ফ্লাইটে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর শোনা যায়।
তাই, বিমানযাত্রীদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং ভ্রমণের সময় শান্ত ও সহনশীল থাকা উচিত।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার