ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স উইলিয়াম, ওয়েলসের যুবরাজ, একটি নতুন মিশনে নেমেছেন। পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে তিনি যুক্তরাজ্যের ডোর্টমুরে এক বিশাল ভূমি পুনরুদ্ধার প্রকল্পের সূচনা করেছেন।
এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করা এবং স্থানীয় জনজীবনকে আরও উন্নত করা।
ডোর্টমুর, দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের একটি বিশাল এলাকা, যেখানে প্রিন্স উইলিয়াম সম্প্রতি এক পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এই অঞ্চলের প্রায় ৬৮ হাজার একর জমির মালিকানা রয়েছে ডিউক অব কর্নওয়ালের হাতে, যা প্রিন্স উইলিয়ামের পিতার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া।
এখানে মূলত প্রাকৃতিক কার্বন ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত ‘পীতভূমি’ (peatland) ক্ষয়ে যাচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের আরও অবনতি ঘটছে। এই সমস্যাগুলো সমাধানেই মূলত এই প্রকল্পের সূচনা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ডিউক অব কর্নওয়াল স্থানীয় ভূমি মালিক ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে মিলিত হয়ে কাজ করবে। এর মূল লক্ষ্য হলো – চারণভূমির নতুন পদ্ধতি তৈরি, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, নদীর পুনরুদ্ধার এবং স্থানীয় কৃষক ও জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ডোর্টমুরের প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে এই অঞ্চলকে রক্ষা করা যাবে। একই সাথে, স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং কৃষকদের চাহিদা পূরণের দিকেও নজর রাখা হবে।
প্রকল্পের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রিন্স উইলিয়াম এটিকে “সাহসী ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “ডোর্টমুর ভিশন আমাদের দেখায়, কিভাবে একসঙ্গে কাজ করে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। বর্তমান প্রজন্মের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি জরুরি।”
প্রিন্স উইলিয়াম শুধু পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রেই নন, বরং সমাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানেও কাজ করেন। তিনি গৃহহীনতা দূরীকরণেও উদ্যোগী হয়েছেন এবং কর্নওয়ালে সামাজিক আবাসন তৈরির পরিকল্পনা করছেন।
এছাড়াও, তিনি সম্প্রতি উত্তর মুরের দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করার জন্য স্থানীয় দমকল বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য, ডিউক অব কর্নওয়ালের বিশাল সম্পত্তি রয়েছে, যার মূল্য এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। এই সম্পত্তি থেকে পাওয়া অর্থ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রিন্স উইলিয়াম পান।
প্রতি চার থেকে ছয় সপ্তাহ অন্তর তিনি এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে যান এবং সেখানকার মানুষের সঙ্গে মিশে তাদের সমস্যাগুলো শোনেন। ডিউক অব কর্নওয়ালের সচিব উইল বাক্স-এর মতে, প্রিন্স উইলিয়াম তার কাজের প্রতি খুবই আন্তরিক এবং সমাজের প্রতি ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে চান।
আগামীকাল প্রিন্স উইলিয়াম রাজ পরিবারের সঙ্গে বার্ষিক ট্রুপিং দ্য কালার অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি ঘোড়ার পিঠে চড়ে প্যারেডে অংশ নেবেন এবং বাকিংহাম প্যালেসের বারান্দা থেকে কেট মিডলটন ও তাদের সন্তানদের সাথে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে হাত নাড়বেন।
তথ্য সূত্র: পিপল