ট্রাম্প প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবিকে সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ জেনারেল। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ভেনেজুয়েলার মাদুরো সরকার ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ নামক একটি গ্যাংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, সেই অভিযোগের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন দেশটির জয়েন্ট চিফ্স অফ স্টাফের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল ড্যান কেইন।
বুধবার সিনেটে শুনানিতে জেনারেল কেইনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের এমন কোনো হুমকির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, “আমার মনে হয় না, এই মুহূর্তে কোনো বিদেশি রাষ্ট্রীয় মদদে লোক অনুপ্রবেশ করছে।”
ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছিল যে, ভেনেজুয়েলার সরকার সরাসরি এই গ্যাংটিকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ‘অনুপ্রবেশ’ করাচ্ছে। এই দাবির ভিত্তিতেই অভিবাসীদের দ্রুততম সময়ে, কোনো প্রকার বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই, বিতাড়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছিল।
এর জন্য ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’-এর আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল, যা বিদেশি ‘অনুপ্রবেশ’ অথবা ‘আক্রমণ’-এর পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করার কথা।
ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন, ভেনেজুয়েলার মাদুরো সরকার ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ গ্যাংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। এই গ্যাং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুতর বিপদ ডেকে আনছে। তবে, জেনারেল কেইনের বক্তব্য ট্রাম্প প্রশাসনের সেই দাবিকে দুর্বল করে দিয়েছে।
জেনারেল কেইনের এই মন্তব্যের পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তবে কি তাহলে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের বিতাড়িত করার জন্য যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, সেটি এখন আর প্রয়োজনীয় নেই?
কারণ, যদি কোনো ‘অনুপ্রবেশ’ না-ই হয়ে থাকে, তাহলে তো ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’-এর ব্যবহারেরও কোনো যুক্তি থাকে না।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ গ্যাংয়ের সদস্যরা ভেনেজুয়েলার মাদুরো সরকারের মদদে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর (Department of Homeland Security – DHS) তাদের ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করেছে, যেখানে “বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের খবর দিন” লেখা ছিল।
তবে, জেনারেল কেইনের মন্তব্যের পর ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে এই বিষয়ে বিভেদ স্পষ্ট হয়েছে। অনেকেই মনে করেন, গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা একজন সামরিক কর্মকর্তার এমন বক্তব্য, প্রশাসনের ভেতরের পরস্পরবিরোধী অবস্থানকেই তুলে ধরে।
একই সঙ্গে, এই ঘটনা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি এবং ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন