যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাবিত কর বিল দরিদ্র আমেরিকানদের বছরে প্রায় ১,৬০০ ডলার পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। একই সময়ে, এই বিলটি উচ্চ আয়ের পরিবারগুলোর আয় বার্ষিক গড়ে প্রায় ১২,০০০ ডলার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেবে।
কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস (সিবিও)-এর একটি নতুন বিশ্লেষণে এই তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এই বিশ্লেষণ অনুযায়ী, রিপাবলিকানদের উত্থাপিত এই কর বিলের ফলে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর আয় বছরে প্রায় ৫০০ থেকে ১,০০০ ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
সিবিও-র বিশ্লেষণ অনুযায়ী, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর এই নেতিবাচক প্রভাবের কারণ হলো প্রস্তাবিত কিছু সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কাটছাঁট। এর মধ্যে রয়েছে মেডিকেড এবং খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি, যা কম আয়ের মানুষের জন্য সহায়ক।
এছাড়া, খাদ্য সহায়তা পাওয়ার জন্য কর্মসংস্থান বিষয়ক নতুন কিছু শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাবও রয়েছে। এর অধীনে, কর্মক্ষম বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি মাসে কমপক্ষে ৮০ ঘণ্টা কাজ, শিক্ষা অথবা সেবামূলক কার্যক্রমে যুক্ত থাকতে হবে, যদি তারা মেডিকেড সুবিধা পেতে চান।
এই বিলের সমালোচকেরা বলছেন, এটি সমাজের দরিদ্র এবং শ্রমজীবী মানুষের থেকে সম্পদ তুলে নিয়ে ধনী ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেবে। ডেমোক্রেট দলের সদস্য ব্রেন্ডন বয়েল এক বিবৃতিতে এই বিলটিকে “মার্কিন ইতিহাসে শ্রমজীবী পরিবার থেকে অতি-ধনীতে সম্পদ স্থানান্তরের অন্যতম বৃহৎ উদাহরণ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং একে “লজ্জাজনক” বলেছেন।
অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা এই বিলের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলছেন, এটি অর্থনীতির জন্য উপকারী হবে এবং ঋণ সংকট মোকাবিলার জন্য সরকারি ব্যয় কমানো জরুরি। তারা আরও বলছেন, শুল্ক থেকে অর্জিত আয় এই কর বিলের খরচ কমাতে সহায়ক হবে।
সিনেটর মাইক ক্রাপো বৃহস্পতিবার সিনেট ফিনান্স কমিটির শুনানিতে বলেন, “এই বিল আমাদের ঋণ সমস্যার সমাধান হিসেবে আমেরিকানদের ওপর আরও বেশি কর আরোপের পরিবর্তে ব্যয় কমানোর কথা বলছে।”
সিবিও-এর মতে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বিলটি কার্যকর হলে দেশের অর্থনীতির ওপর কেমন প্রভাব পড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক পরিকল্পনার কারণে আগামী দশ বছরে ২.৮ ট্রিলিয়ন ডলার ঘাটতি কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একই সময়ে, এটি অর্থনীতির আকার ছোট করে দিতে পারে, মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে এবং পরিবারের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে।
উল্লেখ্য, সিবিও একটি নিরপেক্ষ সংস্থা, যা কংগ্রেসকে বাজেট সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করে। তারা সাধারণত হাউস বা সিনেট কমিটিতে অনুমোদিত প্রায় প্রতিটি বিলের ব্যয় মূল্যায়ন করে থাকে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস