নিউ ইয়র্কের নির্বাচনে ভোট গণনা: সহজে বুঝুন র‌্যাঙ্কড-চয়েস ভোটিং!

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে মেয়র নির্বাচনের জন্য একটি অভিনব পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে, যা আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার থেকে বেশ ভিন্ন। এই পদ্ধতিতে ভোটাররা প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এক ধরনের ক্রমবিন্যাস ব্যবহার করেন, যা ‘র‍্যাঙ্কড-চয়েস ভোটিং’ (ক্রমবিন্যাসিত পছন্দ ভোট) নামে পরিচিত।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা রাখা বর্তমান বিশ্বে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই আসুন, জেনে নিই নিউ ইয়র্কের এই বিশেষ ভোট গ্রহণ পদ্ধতি সম্পর্কে।

র‍্যাঙ্কড-চয়েস ভোটিং মূলত এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের একটি তালিকা তৈরি করেন। সাধারণত, একজন ভোটার একাধিক প্রার্থীর নাম পছন্দক্রম অনুযায়ী সাজান – প্রথম পছন্দ, দ্বিতীয় পছন্দ, তৃতীয় পছন্দ, ইত্যাদি।

নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ভোটাররা সর্বোচ্চ পাঁচজন প্রার্থীকে পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন। যদি কোনো প্রার্থী প্রথম পছন্দের ভোটে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পান, তাহলে তিনি সরাসরি বিজয়ী হন।

কিন্তু যদি কোনো প্রার্থী এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারেন, তবে ভোট গণনার একটি বিশেষ প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এই প্রক্রিয়ায়, যে প্রার্থীর ভোট সবচেয়ে কম থাকে, তাকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর ওই প্রার্থীর পক্ষে দেওয়া দ্বিতীয় পছন্দের ভোটগুলো অন্য প্রার্থীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।

এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে, যতক্ষণ না পর্যন্ত নির্বাচনে কেবল দুইজন প্রার্থী অবশিষ্ট থাকেন। অবশেষে, যে প্রার্থীর ভোট বেশি থাকে, তিনিই বিজয়ী হন।

এই পদ্ধতির সুবিধা হলো, এটি ভোটারদের একাধিক প্রার্থীকে সমর্থন করার সুযোগ দেয়। এর ফলে, বিজয়ী প্রার্থী শুধু একটি নির্দিষ্ট দলের সমর্থনই পান না, বরং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সমর্থন লাভ করেন।

সমালোচকরা বলেন, এই পদ্ধতি বেশ জটিল এবং এতে অনেক সময় লাগতে পারে। তাছাড়া, কম সচেতন ভোটারদের জন্য এটি বিভ্রান্তিকর হতে পারে।

নিউ ইয়র্ক সিটিতে মেয়র নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী রয়েছে। নির্বাচনের দিন, অর্থাৎ ২৪শে জুন, প্রাথমিক ফলাফলের একটি অংশ প্রকাশ করা হবে, যেখানে প্রথম পছন্দের ভোটগুলি গণনা করা হবে।

এর এক সপ্তাহ পর, ১লা জুলাই তারিখে, চূড়ান্ত ফলাফলের প্রথম চিত্র পাওয়া যাবে। এরপর, প্রতি মঙ্গলবার ফলাফল আপডেট করা হবে এবং ১৫ই জুলাই চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হবে।

অতীতে, এই ভোট গ্রহণ পদ্ধতিতে কিছু ত্রুটি দেখা গিয়েছিল। ২০২১ সালের নির্বাচনে ভোট গণনার সময় কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল।

তবে, নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার সেই ভুলগুলো এড়ানোর জন্য তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন।

বিশ্বায়নের এই যুগে, বিভিন্ন দেশের নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত থাকা জরুরি। নিউ ইয়র্কের র‍্যাঙ্কড-চয়েস ভোটিং পদ্ধতি তেমনই একটি উদাহরণ, যা আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার থেকে ভিন্ন।

এই ধরনের পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে, আমরা বিভিন্ন দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারি এবং নিজেদের জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *