ড্রাগন প্রশিক্ষণের জগৎ: অ্যানিমেটেড থেকে লাইভ-অ্যাকশন ছবিতে বড় পরিবর্তন।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘হাউ টু ট্রেইন ইউর ড্রাগন’ -এর লাইভ-অ্যাকশন সংস্করণ। ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।
এবার নতুন রূপে, আরও আকর্ষণীয় করে দর্শকদের সামনে আসছে এই ছবি। পরিচালক ডিন ডুবলোইস (Dean DeBlois), যিনি অ্যানিমেটেড ত্রয়ীও পরিচালনা করেছেন, লাইভ-অ্যাকশন ছবিতে গল্পের গভীরতা এবং অ্যাকশন দৃশ্যে এনেছেন নতুনত্ব।
২০২৩ সালের ১৩ই জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে হিকাপ ও টুথলেসের বন্ধুত্বকে কেন্দ্র করে গল্পের মোড় পরিবর্তন করা হয়েছে।
আসল গল্পে ভাইকিং সম্প্রদায়ের মানুষ এবং ড্রাগনদের মধ্যে বিদ্যমান শত্রুতার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। হিকাপ নামের এক তরুণের ড্রাগন টুথলেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এই সম্পর্ক ভাইকিং সমাজের চিরাচরিত ধারণাকে বদলে দেয়। লাইভ-অ্যাকশন ছবিতে গল্পের এই মূল বিষয়টিকে অক্ষুণ্ণ রেখে, কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
প্রথমত, অ্যানিমেটেড ছবিতে ভাইকিংদের ওপর ড্রাগনদের আক্রমণ দৃশ্যটি ছিল অপেক্ষাকৃত কম তীব্র। কিন্তু নতুন ছবিতে ড্রাগন আক্রমণের দৃশ্য অনেক বেশি বাস্তবসম্মত এবং ভয়ঙ্কর করে তোলা হয়েছে, যা দর্শকদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করবে।
দ্বিতীয়ত, হিকাপ ও অ্যাস্ট্রিডের (Astrid) মধ্যেকার সম্পর্ক আরও গভীর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছবিতে হিকাপের প্রতি অ্যাস্ট্রিডের আবেগ, সমর্থন এবং তাদের কথোপকথন দর্শকদের মন জয় করবে।
অ্যানিমেটেড ছবিতে অ্যাস্ট্রিড হিকাপকে শুধু শুভকামনা জানিয়েছিল। কিন্তু নতুন ছবিতে তাদের মধ্যে গভীর আলোচনা দেখা যাবে।
তৃতীয়ত, টুথলেসের (Toothless) যুদ্ধ এবং অ্যাকশন দৃশ্যগুলো আরও দীর্ঘ এবং আকর্ষণীয় করা হয়েছে। অ্যানিমেটেড ছবিতে যখন একটি দানব ড্রাগন হিকাপের ওপর আক্রমণ করে, তখন টুথলেস তাকে দ্রুত প্রতিহত করে।
কিন্তু লাইভ-অ্যাকশন ছবিতে এই লড়াই অনেকক্ষণ ধরে চলে, যা দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
চতুর্থত, হিকাপের সঙ্গে অ্যাস্ট্রিডের কথোপকথনে এসেছে নতুন মাত্রা। অ্যানিমেটেড ছবিতে গোবারের সঙ্গে রাতের খাবারের সময় অ্যাস্ট্রিড হিকাপকে ড্রাগন ম্যানুয়াল পড়ার কথা বলতে শোনা যায়।
কিন্তু নতুন ছবিতে অ্যাস্ট্রিড হিকাপকে সরাসরি প্রশ্ন করে, সে ড্রাগনদের দলে নাকি ভাইকিংদের দলে? এছাড়াও, অ্যাস্ট্রিড একদিন ভাইকিংদের প্রধান হওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করে, যা দর্শকদের আকর্ষণ করবে।
সবশেষে, গল্পের ক্লাইম্যাক্সে, যখন স্টোইক (Stoic) তার ছেলের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে, সেই দৃশ্যে অ্যাস্ট্রিড এসে তাকে সান্ত্বনা দেয়। এই আবেগপূর্ণ দৃশ্যটি দর্শকদের হৃদয়ে গভীর দাগ কাটবে।
পরিচালক ডিন ডুবলোইসের মতে, লাইভ-অ্যাকশন ছবিতে চরিত্রগুলোর সম্পর্ক আরও গভীর করার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ছবিটিতে অ্যাকশন এবং আবেগ, দুটো দিকেই দর্শকদের জন্য নতুনত্ব রয়েছে।
হিকাপ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ম্যাসন থেমস (Mason Thames) এবং অ্যাস্ট্রিডের চরিত্রে নিকো পার্কার (Nico Parker)। ম্যাসন থেমস অ্যাস্ট্রিডের অভিনয়কে প্রশংসার চোখে দেখেছেন এবং বলেছেন, “ছবিতে তার অভিনয় অসাধারণ, যা অন্যতম আকর্ষণ।”
মোটকথা, ‘হাউ টু ট্রেইন ইউর ড্রাগন’ -এর লাইভ-অ্যাকশন সংস্করণটি পুরনো গল্পের প্রতি সম্মান জানিয়ে নতুনত্বের মিশেলে দর্শকদের জন্য আরও উপভোগ্য করে তোলা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: পিপল