ফিনল্যান্ডে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত একটি জাহাজের বিরুদ্ধে বাল্টিক সাগরে সমুদ্রের নিচে থাকা বিদ্যুতের তারে (cable) আঘাত হানার অভিযোগ উঠেছে। ফিনল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছর ডিসেম্বর মাসে ফিনল্যান্ড ও এস্তোনিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী কেবলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনায় রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন একটি জাহাজের সিনিয়র কর্মকর্তাদের দায়ী করা হচ্ছে।
অভিযুক্ত জাহাজটির নাম ‘ঈগল এস’। এটি কুক আইল্যান্ডসের পতাকাবাহী একটি তেলবাহী জাহাজ। ফিনল্যান্ডের কাস্টমস কর্মকর্তা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী কমিশনের মতে, এটি রাশিয়ার ‘ছায়া বহরের’ অংশ। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়াতে পুরোনো জাহাজ ব্যবহার করছে। এইসব জাহাজের মালিকানা প্রায়ই অস্পষ্ট থাকে এবং তাদের পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত বীমাও থাকে না।
ফিনল্যান্ডের তদন্তকারীরা বলছেন, ‘ঈগল এস’ জাহাজটি তার অ্যাংকর টেনে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়, যার ফলে কেবলটিতে ক্ষতি হয়। এই ঘটনায় জাহাজের ক্যাপ্টেন, চিফ মেট এবং সেকেন্ড মেট সহ কয়েকজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধমূলক কার্যকলাপ এবং টেলিযোগাযোগে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তদন্তের নেতৃত্ব দেওয়া ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন-এর প্রধান গোয়েন্দা পরিদর্শক সামি লিইমাটাইনেন জানিয়েছেন, “তদন্তে জাহাজের অবস্থা এবং অ্যাংকর ফেলার ক্ষেত্রে তাদের কতটুকু দায়িত্ব ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ক্ষতিগ্রস্ত ‘এস্টলিঙ্ক-২’ কেবলটি এস্তোনিয়ার বিদ্যুতের চাহিদার প্রায় অর্ধেক পূরণ করতে সক্ষম। যদিও কেবল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিষেবা ব্যাহত হয়নি, তবে বাল্টিক অঞ্চলের দেশগুলোতে বিদ্যুতের দাম কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল। এই কেবলটি প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং সমুদ্রের গভীরতা প্রায় ৯০ মিটার। ইউরোপের ব্যস্ততম নৌপথগুলোর একটির ওপর দিয়ে এই কেবল গিয়েছে।
সমুদ্রের তলদেশে থাকা এই কেবল ও পাইপলাইনগুলো নর্ডিক, বাল্টিক এবং মধ্য ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। এর মাধ্যমে বাণিজ্য, জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায় এবং রাশিয়ার জ্বালানি নির্ভরতা কমানো যায়। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, ইউরোপে মস্কোর বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতমূলক (sabotage) কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে, যা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস