আন্তর্জাতিক স্তরে অনলাইন ভাষায় গালাগাল নিয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণা হয়েছে, যা আমাদের ভাষার ব্যবহারের এক নতুন দিক উন্মোচন করেছে। এই গবেষণায় বিভিন্ন ইংরেজিভাষী অঞ্চলের ১.৭ বিলিয়ন শব্দের বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে অনলাইন জগতে গালাগালের প্রবণতা এবং এর সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইংরেজি ভাষায় কথা বলা দেশগুলোতে গালাগালের ধরনে ভিন্নতা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, অনলাইনে গালাগালি করার ক্ষেত্রে আমেরিকান এবং ব্রিটিশরা এগিয়ে আছে, যেখানে অস্ট্রেলীয়দের তুলনায় তারা বেশি শব্দ ব্যবহার করে।
গবেষণায় গালাগাল হিসেবে ব্যবহৃত প্রায় ৬০০ রকমের শব্দ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হওয়া শব্দটির প্রায় ২০২ টি ভিন্ন রূপ পাওয়া গেছে।
গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, ভাষার এই ধরনের ব্যবহারের কারণ নিহিত রয়েছে সংস্কৃতিতে। আমেরিকাতে, যেখানে ব্যক্তিগত মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেখানে অনলাইনে গালাগালের প্রবণতা বেশি।
তবে, জনসাধারণের সামনে গালাগাল করাকে তারা ভালোভাবে নেয় না। ধর্মীয় অনুশাসন এর একটি কারণ। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ায় গালাগালকে প্রকাশ্যে বলার ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি স্বাধীনতা দেখা যায়।
গবেষণে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে এসেছে। সেটি হলো, ইংরেজি ভাষার উপর যাদের ভালো দখল আছে, তাদের মধ্যে গালাগালি করার প্রবণতা বেশি। সিঙ্গাপুরের উদাহরণ থেকে এটি স্পষ্ট হয়।
সেখানে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার বাড়ছে এবং তরুণ প্রজন্ম তাদের নিজেদের পরিচয় ফুটিয়ে তুলতে গালাগালি ব্যবহার করে।
গবেষকরা মনে করেন, গালাগালি শুধুমাত্র খারাপ অভ্যাস নয়। এটি যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এটি মানুষকে হাসাতে, রাগ প্রকাশ করতে এবং বন্ধুত্বের সম্পর্ক গভীর করতে সাহায্য করে।
বর্তমানে, প্রযুক্তি এবং সামাজিক পরিবর্তনের কারণে ভাষারীতিতে পরিবর্তন আসছে। আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক ভাষার মধ্যেকার বিভেদ ক্রমশ কমছে।
এই গবেষণাটি অনলাইন ভাষার ব্যবহারের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরও গভীর অনুসন্ধানের সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
তথ্য সূত্র: CNN