যুক্তরাষ্ট্রে ‘নো কিংস’ প্রতিবাদ সমাবেশ: গণতন্ত্র ও অধিকার রক্ষার আহ্বান।
যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি “নো কিংস” (No Kings) নামে পরিচিত প্রতিবাদ সমাবেশগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন শহরে হওয়া এই প্রতিবাদগুলোতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা তাদের উদ্বেগের কারণ হিসেবে তুলে ধরেন গণতন্ত্রের অবক্ষয়, সরকারের একনায়কতান্ত্রিকতা, এবং সমাজে ধনী-গরীবের মধ্যে বেড়ে চলা বৈষম্যকে।
প্রতিবাদকারীরা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর আড়াইশো বছর পূর্তি এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মদিনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভকারীদের মূল লক্ষ্য ছিল তাদের উদ্বেগের কথা জানানো। তাদের প্রধান অভিযোগ ছিল, সরকারের নীতিগুলো সাধারণ মানুষের অধিকারকে খর্ব করছে এবং সমাজের দুর্বল অংশগুলোকে আরও অসহায় করে তুলছে।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা গণতন্ত্রের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তাদের মতে, নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা বিস্তারের চেষ্টা গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিক্ষোভকারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলো ধীরে ধীরে স্বৈরাচারী শাসনের দিকে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে। নিউইয়র্কের এক প্রতিবাদকারী বলেন, “আমরা মনে করি, এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত।”
সমাবেশে বক্তারা সামরিক কুচকাওয়াজের অর্থ অপচয় নিয়েও সমালোচনা করেন। তাদের মতে, জনগণের করের অর্থে পরিচালিত এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোর পরিবর্তে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে আরও বেশি অর্থ ব্যয় করা উচিত। বিক্ষোভকারীরা সামরিকীকরণের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন এবং একে জনগণের প্রতি হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেন।
প্রতিবাদকারীরা অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করেন। তারা অভিবাসন বিরোধী নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি সমর্থন জানান। প্রতিবাদকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস – ICE)-এর ধরপাকড় নীতির নিন্দা করেন এবং অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য সোচ্চার হন।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন দুর্বল ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন। তারা সরকারের স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিষেবা খাতের ওপর কাটছাঁট নীতির সমালোচনা করেন। তাদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপগুলো সমাজের দুর্বল ও প্রান্তিক মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সমাবেশগুলো গণতন্ত্র, অধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা তাদের কণ্ঠের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেছেন এবং একটি উন্নত ভবিষ্যতের জন্য তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন