আশ্চর্য! বিমানে দুই নারীর বন্ধুত্ব, ভাইরাল ভিডিও!

আকাশপথে অপ্রত্যাশিত সাক্ষাৎ, বন্ধুত্ব আর রূপচর্চার গল্প: টিকটকে ভাইরাল দুই তরুণীর কাহিনি।

কখন যে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায়, তা বলা কঠিন। এমনই এক অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী থাকল আটলান্টিক মহাসাগরের উপর দিয়ে ওড়া একটি বিমান।

সেখানে পরিচয় হয় সিডনি হোগারহাইড এবং হেইলি কুলপেপার নামের দুই তরুণীর। ফ্লাইট ধরতে দেরি হওয়ার পর বিমানের ইকোনমি ক্লাসে তাদের দেখা। আর তারপর? রূপচর্চার এক দারুণ অভিজ্ঞতা, যা জন্ম দিল এক নতুন বন্ধুত্বের। সেই বন্ধুত্বের গল্প এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

আসলে, সিডনির ফ্লাইটটি ছাড়তে দেরি হচ্ছিল। শার্লট হয়ে তাদের পুন্তা কানায় যাওয়ার কথা ছিল। বিমানবন্দরে পৌঁছাতে যখন ১১টা বেজে ২ মিনিট, তখন তারা জানতে পারেন, তাদের বিমান ছাড়ার সময় পেরিয়ে গেছে।

কোনোরকমে তারা বিমানে উঠতেই দেখেন, তাদের সিটের পাশে বসা ছিলেন হেইলি। হেইলি একা ছিলেন, কারণ তার বয়ফ্রেন্ডকে আপগ্রেড করে প্রথম শ্রেণির টিকিট দেওয়া হয়েছিল।

বিমানে উঠেই সিডনি হেইলির কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেন, “আমি আসতেই দেরি করে ফেলেছি।” হেইলিও হাসতে হাসতে উত্তর দেন, “আরে, এটা তো আমার সঙ্গেই হয়।” এরপর তাদের মধ্যে শুরু হয় গল্প।

তাদের মধ্যে রূপচর্চার প্রতি ভালোবাসার বিষয়টি ছিল বেশ মিল। সিডনি জানান, তিনি সব সময় ভালোভাবে মেকআপ করে উড়ানে উঠতে পছন্দ করেন। হেইলিও তার সঙ্গে সহমত পোষণ করেন।

এরপরই তারা বিমানের মধ্যেই তাদের মেকআপের সরঞ্জাম বের করেন। সিডনি তার শীতের জন্য কেনা একটি ফাউন্ডেশন দেখালে, হেইলি জানান, তার কাছে গরমকালের জন্য কেনা গাঢ় রঙের ফাউন্ডেশনও আছে। এরপর চলে তাদের মেকআপের পালা।

তাদের সিট নম্বর ছিল ২৮। তাদের ব্রাশ, প্যালেট আর প্রসাধনের সরঞ্জাম দিয়ে যেন তারা একটি মিনি বিউটি পার্লার তৈরি করে ফেলেছিলেন।

কথা বলতে বলতে তারা তাদের ক্যারিয়ার, কেনাকাটা এবং ভবিষ্যতের নানা স্বপ্ন নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন। বিমান যখন ডমিনিকান রিপাবলিকের মাটিতে নামে, তখনও তাদের বন্ধুত্বের রেশ কাটেনি।

তাদের আলোচনার বিষয় ছিল বিক্রিবাট্টা, যা তারা দুজনেই উপভোগ করছিলেন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় ছিল, তারা জানতে পারেন, একই রিসোর্টে তাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে।

পরের দিন, পুলের ধারে হেইলির বন্ধুদের ছবি তোলার সময় সিডনি একটি ক্যামেরা নিয়ে আসেন। তিনি ছবি তোলেন এবং সেগুলো হেইলির সঙ্গে শেয়ার করেন। এরপর সিডনি তাদের মেকআপ করার ভিডিওটি টিকটকে আপলোড করেন।

ভিডিওটি আপলোডের পর যা ঘটল, তা ছিল অভাবনীয়। কয়েক দিনের মধ্যেই ভিডিওটি প্রায় ৬ মিলিয়ন ভিউ হয় এবং কয়েক লক্ষ মানুষ এটি পছন্দ করে। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল, “পুন্তা কানার পথে এই অচেনা মেয়েটির সঙ্গে দেখা। তার একটি ডিনার পার্টি ছিল আর আমার ছিল রাতের খাবার।

তাই আমরা ইকোনমি ক্লাসে বসে মেকআপ করলাম। আমরা আমাদের সব মেকআপ সামগ্রী শেয়ার করেছি এবং শ্যাম্পেন অর্ডার করেছি। এটাই নারীত্ব। পুরুষরা এটা বুঝবে না।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের বন্ধুত্বের এই গল্প ব্যাপক সাড়া ফেলে। বিভিন্ন মেকআপ ব্র্যান্ড তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের শুভেচ্ছা জানায়। হেইলি জানান, তার বাবার একটি মেসেজ ছিল, যেখানে তিনি লিখেছিলেন, “তুমি টিকটকে বিখ্যাত হয়েছ!”

সিডনি জানান, এই ঘটনার পর তারা দুজনেই বন্ধুত্বের সম্পর্কটা ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের পরিকল্পনা হল, তারা সবসময় একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন এবং ভবিষ্যতে একসঙ্গে অনেক কিছু করার চেষ্টা করবেন।

হেইলি বলেন, “নতুন বন্ধুত্বের জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকুন। কারণ আপনি জানেন না, কে আপনার জীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে।”

এই ঘটনা প্রমাণ করে, বন্ধুত্ব কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ নয়। এটি যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে হতে পারে।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *