চমকে দেওয়ার মতো খবর! ১৫ ডলার মজুরির পক্ষে রিপাবলিকান?

যুক্তরাষ্ট্রের একজন রিপাবলিকান সিনেটরের প্রস্তাব, শ্রমিকদের জন্য ১৫ ডলারের সর্বনিম্ন মজুরি

যুক্তরাষ্ট্রে মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। দেশটির মিসৌরি অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান সিনেটর জশ হাওলি ফেডারেল সর্বনিম্ন মজুরি ১৫ ডলারে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছেন। বর্তমানে ফেডারেল সর্বনিম্ন মজুরি হল ৭.২৫ ডলার, যা ২০০৯ সাল থেকে অপরিবর্তিত রয়েছে।

এই প্রস্তাবের কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ সাড়া পড়েছে।

বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজ্যে কর্মীদের জন্য ফেডারেল সর্বনিম্ন মজুরির চেয়ে বেশি বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে। এমনকি আগামী বছরগুলোতে অনেক রাজ্যে এই হার আরও বাড়তে পারে। এর কারণ হিসেবে দেখা যায়, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের প্রকৃত আয় কমে গেছে।

উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ সালে একজন শ্রমিক যদি ৭.২৫ ডলার আয় করতেন, তাহলে আজকের বাজারে সেই একই পরিমাণ জিনিস কিনতে হলে তার ১০.৮২ ডলার প্রয়োজন হতো।

এই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি দিয়ে সিনেটর হাওলি বলেছেন, “কাজেরত আমেরিকানরা দশকের পর দশক ধরে তাদের মজুরি একই রকম থাকতে দেখছে। এর প্রধান কারণ হল, ফেডারেল সর্বনিম্ন মজুরি দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে তাল মেলাতে ব্যর্থ হয়েছে।

এই দ্বিদলীয় আইন নিশ্চিত করবে যে, সারা দেশের শ্রমিকরা উচ্চ মজুরির সুবিধা পাবে।”

তবে, এই প্রস্তাবের কিছু সম্ভাব্য নেতিবাচক দিকও রয়েছে। অনেকে মনে করেন, মজুরি বাড়লে কিছু ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান কমে যেতে পারে। কারণ, ব্যবসায়ীরা বেশি মজুরি দিতে গিয়ে কর্মীদের ছাঁটাই করতে পারেন অথবা প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকতে পারেন।

উদাহরণস্বরূপ, বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি আসার কারণে শ্বেত পোশাকের কর্মীদের চাকরি হারানোর সম্ভবনা বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটির প্রায় ১% কর্মী ফেডারেল সর্বনিম্ন মজুরি অথবা তার চেয়েও কম আয় করেন। তবে, ১৫ ডলারের কম মজুরি পান এমন কর্মীর সংখ্যা অনেক বেশি, প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ।

অর্থনীতিবিদদের মতে, মজুরি ১৫ ডলারে উন্নীত করা হলে এই বিপুল সংখ্যক কর্মীর জীবনযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে, এই ধরনের পরিবর্তন সবসময়ই কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

যুক্তরাষ্ট্রে মজুরি বৃদ্ধির এই বিতর্ক বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য ন্যায্য মজুরি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের আলোচনার সঙ্গে তুলনীয়।

এই প্রস্তাবের ফলে শ্রমিকদের আয় বাড়বে, নাকি এর ফলস্বরূপ কর্মসংস্থান কমবে, তা এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *