ঘুমের যন্ত্রনা থেকে মুক্তি! বিশেষ জ্যাকেট যা ঘুম আনবে চোখের পলকে!

ঘুমের অভাব: স্মার্ট জ্যাকেট কি পারবে সমাধান দিতে?

বিশ্বজুড়ে মানুষের ঘুমের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। কর্মব্যস্ত জীবন, যানজট, কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ – এসব কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে। উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও ঘুম কম হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।

সম্প্রতি, জাপানের একটি ডিজাইন সংস্থা ঘুমের সমস্যা সমাধানে অভিনব এক উপায় খুঁজে বের করেছে। তারা তৈরি করেছে ‘স্মার্ট’ একটি জ্যাকেট, যা ঘুমের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারবে।

জাপানের এই উদ্ভাবনী জ্যাকেটের নাম দেওয়া হয়েছে ZZZN। এটি মূলত একটি ‘পাফার জ্যাকেট’ বা শীতের পোশাকের মতো, যা পরিধানকারীর বায়োমেট্রিক ডেটা ব্যবহার করে ঘুমের প্রক্রিয়াকে উন্নত করবে।

এর সাথে একটি স্মার্ট রিং যুক্ত করা হয়েছে যা ব্যবহারকারীর হৃদস্পন্দন এবং শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করে। এই ডেটা বিশ্লেষণ করে জ্যাকেটটি আলো এবং শব্দের মাধ্যমে ঘুম আনতে সাহায্য করবে।

জ্যাকেটটির নির্মাতা সংস্থা কোনেলের ক্রিয়েটিভ আর্ট ডিরেক্টর দাই মিয়াতা জানান, “ঘুম একটি ব্যক্তিগত বিষয়। তাই, কাউকে জোর করে ঘুম পাড়ানো যায় না। আমরা এমন কিছু তৈরি করতে চেয়েছিলাম, যা মানুষকে নিজের মতো করে ঘুমাতে সাহায্য করবে।”

জ্যাকেটটির নকশা করা হয়েছে জাপানের ঐতিহ্যবাহী ‘যোগী’ পোশাকের আদলে, যা ঘুমের জন্য আরামদায়ক। জ্যাকেটের হুড ব্যবহারকারীকে বাইরের গোলমাল থেকে আড়াল করে, যা ঘুমের জন্য সহায়ক।

ঘুমের সময় জ্যাকেটটি লাল আলো নির্গত করবে, যা ঘুম আনতে সাহায্য করে। আবার, শরীরে জেগে ওঠার জন্য নীল আলো ব্যবহার করা হবে।

শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে প্রভাবিত করারও ব্যবস্থা রয়েছে। পরিধানকারীর মানসিক চাপ কমাতে পারলে, একই আলো ও শব্দ বজায় থাকবে। অন্যথায়, ঘুমের সহায়ক আরও কার্যকর শব্দ ব্যবহার করা হবে।

জাপানে ঘুমের অভাব একটি গুরুতর সমস্যা। গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটির মানুষ ঘুমের দিক থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছে।

ঘুমের অভাবে উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়া, সড়ক দুর্ঘটনা এবং অন্যান্য দুর্ঘটনার কারণে দেশটির বছরে প্রায় ১৩৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়, যা তাদের জিডিপির প্রায় ৩ শতাংশ।

জাপানের মতো বাংলাদেশেও ঘুমের অভাব একটি উদ্বেগের বিষয়। যানজট, কাজের চাপ, শব্দ দূষণ এবং জীবনযাত্রার বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেকেই পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারেন না।

মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে ঘুমের গুরুত্ব অপরিহার্য।

যদিও এই স্মার্ট জ্যাকেট এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে, তবে নির্মাতারা মনে করেন, এটি ঘুমের সমস্যা সমাধানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।

আগামী বছর ওসাকা এক্সপো ২০২৫-এ এই জ্যাকেটটি প্রদর্শিত হবে, যেখানে দর্শনার্থীরা এটি পরখ করার সুযোগ পাবেন। এই ধরনের প্রযুক্তি যদি জনপ্রিয়তা পায়, তবে তা ঘুমের সমস্যা সমাধানে সহায়ক হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *