মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা: মিত্র হারানোর শঙ্কা সত্ত্বেও রাশিয়ার লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতা একদিকে যেমন রাশিয়াকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে, তেমনি এই সংকট থেকে লাভবান হওয়ারও সুযোগ তৈরি হয়েছে তাদের জন্য।
ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘদিনের মিত্রতা রয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলের বিমান হামলার কারণে তেহরানের সামরিক শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ায় মস্কো কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া মূলত একটি জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছে। একদিকে, ইরানের দুর্বল হয়ে পড়া তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ, কারণ ইরান ছিল ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার অন্যতম সহযোগী।
বিশেষ করে ইরানের তৈরি ড্রোন (Shahed aerial drones) ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকট থেকে রাশিয়া অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় রাশিয়ার অর্থনীতি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়াও, এই সংকট রাশিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের একটি সুযোগ তৈরি করেছে। রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলোতে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে দেখতে চায় এবং এই অঞ্চলের সংকট তাদের সেই সুযোগ এনে দিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছেন।
তিনি এই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে আগ্রহী এবং এরই মধ্যে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি বিষয়ক আলোচনায় সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রও রাশিয়াকে মধ্যপ্রাচ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখতে চাইছে।
কারণ, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তা কমানোর জন্য উভয় দেশই এখন নতুন পথ খুঁজছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইরানের পারমাণবিক চুক্তি এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা—উভয় বিষয়ই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে।
তবে, এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মধ্যপ্রাচ্যের এই সংকট ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ সরিয়ে দিয়েছে।
ফলে, রাশিয়ার সামরিক অভিযান কিছুটা হলেও আলোচনার বাইরে চলে গেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।