যুদ্ধ আর শিকারের নিষ্ঠুরতা থেকে মুক্তি পাওয়া একটি ভাল্লুক, এখন ঘুমের জন্য পুরস্কার জিতছে। শুনতে অবাক লাগলেও, এমনটাই ঘটেছে ইউক্রেনের একটি অভয়ারণ্যে।
Masha নামের এই ভাল্লুকটি সম্প্রতি “মার্চ ন্যাপনেস” প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় ভাল্লুকদের দীর্ঘ সময় ধরে শীতনিদ্রায় থাকার বিষয়টি মূল্যায়ন করা হয়।
মশার জীবনটা এত সহজ ছিল না। ২০১৮ সালে “বিয়ার স্যাংচুয়ারি ডোমাজির”-এ আসার আগে, সে শিকারের কাজে ব্যবহৃত হত।
শিকারের উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষিত কিছু কুকুরকে তার উপর লেলিয়ে দেওয়া হত, যা ছিল অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও নিষ্ঠুর। সেই সময়টা ছিল তার জন্য এক বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা।
কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে, ২০১৪ সালে মasha-কে উদ্ধার করা হয় এবং “ফোর পাওস” নামক একটি আন্তর্জাতিক পশু কল্যাণ সংস্থার তত্ত্বাবধানে আনা হয়।
এরপর তাকে ইউক্রেনের বিয়ার স্যাংচুয়ারি ডোমাজিরে নিয়ে আসা হয়। এখানে সে নতুন করে জীবন খুঁজে পায়।
“মার্চ ন্যাপনেস” প্রতিযোগিতায় মasha-র জয় আসলে তার ঘুরে দাঁড়ানোর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
দীর্ঘ শীতনিদ্রা শেষে সবার আগে জেগে ওঠার পুরস্কার জিতে নিয়েছে সে। এই জয় বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এক সময় মasha-র স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ছিল চরমভাবে বিপর্যস্ত।
অভয়ারণ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, মasha এখন নিরাপদ বোধ করে। তার দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের ভালোবাসায় সে ধীরে ধীরে আগের সব কষ্ট ভুলে যাচ্ছে।
Masha-র জীবনে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু হল পটাপ নামের অন্য একটি ভাল্লুক। তারা একসাথে খেলা করে, সাঁতার কাটে এবং শান্তিতে সময় কাটায়।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনেও এই অভয়ারণ্যটি ভাল্লুকদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করার পরেও, এখানকার কর্মীরা তাদের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। এমনকি, তাঁরা কিয়েভ থেকে আরও সাতটি ভাল্লুককে উদ্ধার করে এখানে নিয়ে এসেছেন।
বর্তমানে, masha-সহ অন্যান্য ভাল্লুকদের জীবন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে।
তবে, “বিয়ার স্যাংচুয়ারি ডোমাজির” সবসময় তাদের পশুদের সুরক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে। সেখানকার কর্মীরা জানিয়েছেন, মasha এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং কৌতূহলী।
সে পটাপের সাথে তার বাসস্থান ভাগ করে নিতে ভালোবাসে এবং বনভূমিতে ঘুরে বেড়ানো, খেলাধুলা করতে পছন্দ করে।
মশার এই সাফল্যের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া অন্যান্য পশুদের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পগুলো আরও একবার সামনে আসে।
তথ্যসূত্র: পিপল ম্যাগাজিন।