অ্যামাজনের রোবট ট্যাক্সি: গুগলকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত?

স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি তৈরির দৌড়ে নামছে অ্যামাজন, সিলিকন ভ্যালিতে বিশাল কারখানা স্থাপন।

বিশ্বজুড়ে স্ব-চালিত গাড়ির (Self-driving car) বাজার ধরতে প্রস্তুত টেক জায়ান্ট অ্যামাজন (Amazon)। তারা তাদের রোবোট্যাক্সি (robotaxi) পরিষেবা ‘জুক্স’ (Zoox) -এর উৎপাদন বাড়াতে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে।

ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালির কাছে একটি অত্যাধুনিক কারখানায় বছরে প্রায় ১০,০০০ স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি তৈরির পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অ্যামাজন, গুগল এর ওয়েইমো (Waymo) এবং টেসলার (Tesla) মতো স্ব-চালিত গাড়ির প্রস্তুতকারকদের সঙ্গে সরাসরি প্রতিযোগিতায় নামতে চাইছে।

স্বয়ংক্রিয় গাড়ির বাজার: এক নজরে।

গুগলের (Google) স্ব-চালিত গাড়ি প্রকল্প ‘ওয়েইমো’ (Waymo) বর্তমানে এই বাজারে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই ফিনিক্স (Phoenix), লস অ্যাঞ্জেলেস (Los Angeles) এবং অস্টিন (Austin)-এর মতো শহরগুলোতে তাদের ট্যাক্সি পরিষেবা চালু করেছে।

ওয়েইমোর দাবি, তারা এরই মধ্যে এক কোটির বেশিবার তাদের ট্যাক্সি পরিষেবা বাবদ ভাড়া নিয়েছে। অন্যদিকে, অ্যামাজন এবং টেসলার মতো সংস্থাগুলো এখনো তাদের প্রযুক্তিকে আরও উন্নত করতে এবং বহর বাড়াতে কাজ করছে।

জুক্স -এর যাত্রা।

২০১৪ সালে ‘জুক্স’-এর ধারণা তৈরি হয়। ২০১৫ সালে অ্যামাজন ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে (তখনকার বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ১২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি) এই স্টার্টআপটিকে কিনে নেয়।

জুক্স-এর লক্ষ্য হল, চলতি বছরের শেষের দিকে লাস ভেগাসে (Las Vegas) এবং আগামী বছর সান ফ্রান্সিসকোতে (San Francisco) তাদের স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি পরিষেবা চালু করা। জুক্স-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) আইচা ইভান্স (Aicha Evans) জানিয়েছেন, তারা প্রথমে ছোট ও মাঝারি আকারের বাজারগুলিতে প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ টি রোবোট্যাক্সি এবং বড় শহরগুলোতে প্রায় ২,০০০ টি রোবোট্যাক্সি পরিচালনা করার পরিকল্পনা করছেন।

উৎপাদন ক্ষমতা ও নকশা।

হেইওয়ার্ডে (Hayward) অবস্থিত জুক্স-এর কারখানাটি প্রায় ২২0,০০০ বর্গফুট (২০,৪৪0 বর্গমিটার) জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এই বিশাল কারখানায় এখন প্রতিদিন একটি রোবোট্যাক্সি তৈরি হচ্ছে।

তবে, আগামী বছর থেকে প্রতি ঘণ্টায় তিনটি গাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তাদের। ২০২৭ সাল নাগাদ, এই কারখানায় বছরে ১০,০০০ ট্যাক্সি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। জুক্স-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের গাড়ির প্রায় অর্ধেক যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

জুক্স-এর রোবোট্যাক্সিগুলো দেখতে অনেকটা বগির মতো, যেখানে একসঙ্গে চারজন যাত্রী বসতে পারবে।

অন্যান্য প্রতিযোগী।

টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) ইলন মাস্কও (Elon Musk) স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি পরিষেবা চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও, কবে নাগাদ টেসলার এই পরিষেবা চালু হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

মাস্ক শুরুতে ১ মিলিয়ন (১০ লক্ষ) ট্যাক্সি বহর তৈরি করার কথা বললেও, বর্তমানে তার পরিকল্পনা কিছুটা সীমিত।

এই বাজারের সম্ভাবনা।

স্বয়ংক্রিয় ট্যাক্সি প্রযুক্তির উন্নয়ন বিশ্বজুড়ে পরিবহন ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে। উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি, উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশেও ভবিষ্যতে এই ধরনের প্রযুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে, যা শহরের যানজট কমাতে এবং উন্নত যাত্রী পরিষেবা দিতে সহায়ক হতে পারে। তবে, এখনই বাংলাদেশে এই ধরনের পরিষেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *