পালাতেও পারে না অনেকে! অপরাধীদের এই দশাই কেন?

পালিয়েও রক্ষা নেই, কেন ধরা পরে যান পলাতকরা?

প্রায়ই দেখা যায়, অপরাধ করে পালানোর চেষ্টা করেও বেশি দূর যেতে পারেন না আসামিরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা সত্ত্বেও অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাদের ধরে ফেলা হয়।

কিন্তু কেন এমনটা হয়? পালিয়ে বাঁচতে না পারার পেছনে কাজ করে অনেকগুলো বিষয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি ঘটনা এর প্রমাণ।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যে দুই আইনপ্রণেতা ও তাদের স্ত্রীর ওপর গুলি চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ভ্যান্স বোয়েলারকে তার পরিবারের বাড়ির কাছেই খুঁজে পাওয়া যায়। এছাড়া, নিউ অরলিন্স শহরের একটি জেল থেকে পালানো ১০ জন আসামীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ধরা পরে শহরের ভেতরেই।

আর একটি জেল থেকে পালিয়ে যাওয়া এক প্রাক্তন পুলিশ প্রধানকে, জেল থেকে মাত্র দেড় মাইল দূরে পাওয়া যায়।

পলাতক আসামীর আত্মগোপনের কৌশল এবং ধরা পড়ার কারণগুলো নিয়ে সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদনে কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। তাদের মতে, আত্মগোপনের উপযুক্ত পরিকল্পনা, এলাকার সম্পর্কে ধারণা ও আর্থিক সঙ্গতি- এসব বিষয় পলাতকদের টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়ায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পালিয়ে থাকা আসামিরা সাধারণত পরিচিত এলাকাতেই থাকতে চায়। কারণ সেখানে তাদের পরিচিতজন থাকে এবং জায়গাটি সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণা থাকে। এছাড়া, পরিবার বা বন্ধুদের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।

কিন্তু পরিচিত এলাকায় থাকার একটি বড় দুর্বলতা হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবার আগে ওই এলাকাতেই তাদের খোঁজে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পালিয়ে বাঁচতে হলে দ্রুত কিছু পরিকল্পনা করতে হয়। অনেক সময় দেখা যায়, অপরাধীরা ঘটনার পরে কি করবে, সে বিষয়ে তাদের তেমন কোনো ধারণা থাকে না।

পালিয়ে যাওয়ার সময় দ্রুত নিজের পরিচয় গোপন করার মতো ব্যবস্থা নেওয়াটাও কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়াও, দেশ ত্যাগ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে, জাল পাসপোর্টসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন হয়, যা অনেক আসামীর পক্ষেই সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ধরা পড়ার সম্ভাবনা এড়িয়ে যাওয়া। কারণ, যখন কোনো আসামীর ছবি ও নাম মিডিয়ায় প্রচারিত হয়, তখন তাদের গাড়ির ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ে। এমনকি, অন্য কারো গাড়ি ব্যবহার করলেও সন্দেহ বাড়ে।

বনের মধ্যে আত্মগোপন করা কি খুব কার্যকর?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বনের মধ্যে আত্মগোপন করা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির বন সম্পর্কে কতটা ধারণা আছে তার ওপর। যদি কোনো ব্যক্তি বনের পরিবেশ সম্পর্কে ভালোভাবে জানে, তাহলে সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে আত্মগোপন করে থাকতে পারে।

কিন্তু পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকলে, বনের জীবন দীর্ঘকাল ধরে চালিয়ে যাওয়া কঠিন। টিকে থাকার মতো প্রয়োজনীয় জিনিস ও মানুষের সাহায্য ছাড়া বেশি দিন বনে বসবাস করা সম্ভব নয়।

তবে, পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করা আসামীদের জন্য একটি কঠিন কাজ। পরিকল্পনা, পরিচিতি এবং আর্থিক সঙ্গতি- সব কিছুই এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *