একটি শামুক তুলেছিলেন, এরপর যা ঘটল! ভয়ঙ্কর বিপদ!

জাপানের ওকিনাওয়ায় সমুদ্র তীরে ঘুরতে যাওয়া এক তরুণীর একটি অভিজ্ঞতা সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বেকিলি রওলস নামের ২৯ বছর বয়সী ওই তরুণী সমুদ্রের একটি সুন্দর শামুক কুড়িয়ে নিয়েছিলেন, যা আসলে ছিল অত্যন্ত বিষাক্ত একটি কোণ শামুক।

এই শামুকটির বিষ এতটাই মারাত্মক যে এটি মানুষের জীবনহানি পর্যন্ত ঘটাতে পারে।

বৃষ্টিভেজা এক সকালে, বেকিলি তাঁর স্বামীর সাথে ওকিনাওয়ার সমুদ্র সৈকতে গিয়েছিলেন। সেখানে সমুদ্রের নানান জীববৈচিত্র্য দেখতে পাওয়া যায়, যা জোয়ারের সময় পানিতে আটকা পড়ে।

বেকিলি জানান, তিনি প্রায়ই সেখানে কাঁকড়া, মাছ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী দেখতে পান। সেদিন, তিনি বালুর মধ্যে অর্ধ-ঢাকা একটি চমৎকার শামুক খুঁজে পান।

শামুকটি দেখতে খুবই আকর্ষণীয় ছিল, তাই কৌতূহলবশত তিনি সেটিকে হাতে তুলে নেন। প্রায় ৩০ সেকেন্ড ধরে তিনি সেটিকে নেড়েচেড়ে ছবি তোলেন।

কিন্তু যখন তিনি শামুকটি উল্টে দেখেন, তখন ভেতরের নরম অংশটি তাঁর নজরে আসে। তখনই তিনি বুঝতে পারেন, এটি একটি জীবিত কোণ শামুক।

আতঙ্কিত হয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গে শামুকটিকে আবার পানিতে রেখে দেন। পরে, বাড়ি ফেরার পথে, তিনি ইন্টারনেটে শামুকটির ছবি দিয়ে অনুসন্ধান করেন।

তখনই তিনি জানতে পারেন, এই শামুকটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর শামুকগুলোর মধ্যে একটি। এই শামুকের বিষ এতটাই শক্তিশালী যে, এটি মানুষকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত করতে বা মেরে ফেলতে পারে।

কোনো প্রতিষেধকও নেই!

বেকিলি জানান, “আমি রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কয়েক দিন ধরে আমার মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছিল। আমার মনে হচ্ছিল, আমাকে বুঝি শামুকটি কামড় দিয়েছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমি যদি এই শামুকের বিপদ সম্পর্কে না জানতাম, তবে হয়তো অনেকেই জানত না। তাই আমি আমার অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

নিজের এই অভিজ্ঞতা জানাতে তিনি একটি ভিডিও তৈরি করে টিকটকে আপলোড করেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায় এবং কয়েক মিলিয়ন মানুষ এটি দেখেছে।

অনেকে এই বিষয়ে সতর্কবার্তা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, আবার অনেকে তাঁর শামুকটি তোলার সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছেন।

এই ঘটনার পর, বেকিলি আরও একটি ভিডিও তৈরি করেন, যেখানে তিনি বিস্তারিতভাবে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, “আমি সমুদ্র ভালোবাসলেও, এই ঘটনা আমাকে অজানা জিনিসের প্রতি আরও বেশি সতর্ক হতে শিখিয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “অনেকে আমাকে একটি ছড়া শিখিয়েছেন, যা আমার মনে গেঁথে গেছে: ‘কোণ দেখলে, দূরে চলো'”।

এই ঘটনা আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিয়ে আসে। আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলে, বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের আশেপাশে, বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী রয়েছে।

এদের মধ্যে কিছু প্রজাতি অত্যন্ত বিষাক্ত হতে পারে। তাই, কোনো অপরিচিত শামুক বা সামুদ্রিক প্রাণী দেখলে, সেটিকে ধরা বা স্পর্শ করার আগে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করুন।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *