কুকুর-বিড়াল হারালে কান্না নয়! প্রযুক্তির সাহায্যে খুঁজে বের করুন!

পোষা প্রাণী হারিয়ে গেলে? প্রযুক্তির সহায়তায় খুঁজে বের করার উপায়।

বর্তমানে বাংলাদেশেও বাড়ছে পশুপ্রেমীর সংখ্যা। অনেকেই তাদের প্রিয় পোষ্যদের পরিবারের সদস্যের মতোই ভালোবাসেন।

কিন্তু প্রিয় বিড়াল বা কুকুর হারিয়ে গেলে মনটা কেমন করে, তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন। পোষা প্রাণী হারিয়ে গেলে তাদের খুঁজে বের করার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা এখন সহজ হয়েছে।

আসুন, জেনে নেওয়া যাক এমনই কিছু প্রযুক্তির কথা যা আপনার হারিয়ে যাওয়া পোষ্যকে খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে।

হারিয়ে যাওয়া পোষ্যের সন্ধান: প্রযুক্তি যেভাবে সাহায্য করে।

পোষা প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাজারে এসেছে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি। এর মধ্যে অন্যতম হলো জিপিএস ট্র্যাকার বা অবস্থান নির্ণয়কারী যন্ত্র।

এই যন্ত্রগুলো সাধারণত পোষা প্রাণীর গলায় পরানো হয় এবং এর মাধ্যমে তাদের সঠিক অবস্থান জানা যায়। এই ট্র্যাকারগুলো স্মার্টফোন অ্যাপের সাথে যুক্ত থাকে, যা ব্যবহার করে আপনি আপনার পোষ্যের গতিবিধি সহজেই নজরে রাখতে পারেন।

বিভিন্ন ধরনের ট্র্যাকার ও তাদের বৈশিষ্ট্য।

বাজারে বিভিন্ন ধরনের জিপিএস ট্র্যাকার পাওয়া যায়। সাধারণত, এই ট্র্যাকারগুলো একটি মাসিক ফি-এর বিনিময়ে কাজ করে।

ট্র্যাকারের মাধ্যমে আপনি আপনার পোষ্যের জন্য একটি নিরাপদ এলাকা (safe zone) নির্ধারণ করতে পারেন। যদি আপনার পোষ্য সেই এলাকা ছেড়ে যায়, তাহলে সাথে সাথেই আপনি সতর্কবার্তা পাবেন।

কিছু জনপ্রিয় ট্র্যাকারের মধ্যে রয়েছে Tractive, Jiobit, Pawfit ইত্যাদি। বিড়ালের জন্য ছোট এবং হালকা ওজনের ট্র্যাকার পাওয়া যায়।

এছাড়াও, Fi এবং Whistle-এর মতো কিছু ব্র্যান্ড কুকুরের জন্য কলারের সাথে সমন্বিত ট্র্যাকার সরবরাহ করে। PetTracer বিড়ালের কলার তৈরি করে, যা জিপিএস এবং রেডিও সংকেত ব্যবহার করে।

খরচ কেমন?

জিপিএস ট্র্যাকারের দাম ব্র্যান্ড ও মডেলের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত, ডিভাইসটির দাম কয়েক হাজার টাকার মধ্যে হতে পারে।

তবে এর সাথে মাসিক বা বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশন ফি যুক্ত হতে পারে, যা আপনার খরচ বাড়াতে পারে।

ব্যাটারি লাইফ ও অন্যান্য সুবিধা।

ট্র্যাকারগুলোতে রিচার্জেবল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। সাধারণত, একবার চার্জ করলে ডিভাইসগুলো কয়েক দিন পর্যন্ত চলতে পারে।

তবে সিগন্যালের তীব্রতা ব্যাটারির ওপর প্রভাব ফেলে। এছাড়াও, কিছু ট্র্যাকারে স্বাস্থ্য ও কার্যকলাপ নিরীক্ষণের সুবিধাও থাকে, যা আপনার পোষ্যের স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে।

ব্লুটুথ ট্র্যাকার: একটি বিকল্প।

জিপিএস ট্র্যাকারের পাশাপাশি, ব্লুটুথ ট্র্যাকারও ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাপলের এয়ারট্যাগ (AirTag), স্যামসাংয়ের স্মার্টট্যাগ (SmartTag) এবং অন্যান্য ব্লুটুথ ট্র্যাকারগুলো স্বল্প দূরত্বের মধ্যে কাজ করে।

এগুলোর ব্যাটারি সাধারণত অনেক দিন টেকে এবং সাবস্ক্রিপশন ফি-এর প্রয়োজন হয় না। তবে ব্লুটুথ ট্র্যাকারের রেঞ্জ সীমিত হওয়ায় শহরের আশেপাশে বসবাসকারীদের জন্য এটি বেশি উপযোগী।

বাংলাদেশে কি এই প্রযুক্তি সহজলভ্য?

বাংলাদেশে এখনো এই ধরনের প্রযুক্তি খুব বেশি সহজলভ্য নয়। তবে অনলাইনে খোঁজ করলে কিছু জিপিএস ট্র্যাকার পাওয়া যেতে পারে।

কেনার আগে অবশ্যই নির্ভরযোগ্য বিক্রেতা নির্বাচন করুন এবং পণ্যের গুণমান যাচাই করুন।

করণীয়।

আপনার পোষ্যকে হারিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচাতে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন। তাদের গলায় আইডি ট্যাগ পরিয়ে দিতে পারেন, যেখানে আপনার ফোন নম্বর ও ঠিকানা লেখা থাকবে।

এছাড়া, পশুচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, মাইক্রোচিপিং করানো যেতে পারে। মাইক্রোচিপ হলো একটি ক্ষুদ্র যন্ত্র, যা আপনার পোষ্যের চামড়ার নিচে স্থাপন করা হয়।

কোনো পোষ্য হারিয়ে গেলে, উদ্ধারকারী প্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে বা পশু হাসপাতালে স্ক্যানারের মাধ্যমে এই চিপের তথ্য যাচাই করে মালিকের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।

পরিশেষে, প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। পোষ্যদের সুরক্ষার ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

আপনার প্রিয় পোষ্যকে নিরাপদে রাখতে, এই প্রযুক্তিগুলোর সুবিধা নিতে পারেন।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *