আতঙ্কে ব্যাংক! সুদের হার অপরিবর্তিত, বড় ধাক্কা?

যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড (Bank of England), তাদের প্রধান সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন: ৪.২৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবারের এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রধান কারণ ছিল মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

এই সংঘাতের কারণে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ব্যাংকের ন’জন সদস্যের মধ্যে ৬ জন সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে ভোট দেন। বাকি ৩ জন সামান্য কমানোর পক্ষে ছিলেন।

ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের প্রধান লক্ষ্য হলো মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের মধ্যে রাখা, কিন্তু বর্তমানে তা ৩.৪ শতাংশে রয়েছে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, আগামী মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে থাকতে পারে, তবে আগামী বছর থেকে এটি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয়, তাহলে তেলের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে, যা এই প্রত্যাশা পূরণ হতে বাধা দিতে পারে।

ব্যাংকের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি জানিয়েছেন, বিশ্ব পরিস্থিতি বর্তমানে অত্যন্ত অনিশ্চিত।

শুধু তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করতে পারেন, এমন উদ্বেগের কারণেও বিশ্বজুড়ে দামের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

যদিও যুক্তরাজ্যের ওপর শুল্কের তেমন প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম, তবুও বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভও সুদের হার অপরিবর্তিত রেখেছে, যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্বেগের কারণ হয়েছে।

ট্রাম্প চাইছেন, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড ও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো ফেডারেল রিজার্ভও সুদের হার কমাক। ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড গত আগস্ট মাস থেকে সুদের হার কমানো শুরু করে, যখন তারা সুদের হার ৫.২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪.২৫ শতাংশে এনেছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, আগামী আগস্ট মাসে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড আবার সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

কারণ, যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তন, বিশেষ করে সুদের হারের ওঠানামা, বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *