যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার অর্থনীতিতে মন্দা আসার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী ম্যাক্সিম রেশেতনিকভ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন মন্দার দ্বারপ্রান্তে।
ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার উপর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর ফলস্বরূপ দেশটির অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।
যদিও শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল, নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটির অর্থনীতি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কিন্তু সেই তুলনায় এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান ধরে রাখার কারণে বেকারত্বের হারও তুলনামূলকভাবে কম।
তবে, মন্ত্রীর মতে, পরিস্থিতি বেশি দিন একই রকম নাও থাকতে পারে। একদিকে যেমন মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, তেমনই বিদেশি বিনিয়োগের অভাবও দেখা যাচ্ছে।
এর ফলে সামরিক খাতে অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির উপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে।
রাশিয়ার অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সামরিক খাতের বাইরে অন্য খাতে বিনিয়োগের অভাব দেখা দিলে অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। অর্থমন্ত্রী রেশেতনিকভ মনে করেন, সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করবে রাশিয়া শেষ পর্যন্ত মন্দায় পড়বে কিনা।
তবে, এই বিষয়ে রাশিয়ার অন্য কর্মকর্তারা কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেছেন। দেশটির অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানভ মনে করেন, অর্থনীতির ‘ঠান্ডা হওয়ার’ প্রক্রিয়া চলছে, তবে এর পরে ‘অবশ্যই গ্রীষ্ম আসবে’।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এলভিরা নাবিউলিনা বলেছেন, রাশিয়া ‘অতিরিক্ত গরম অবস্থা’ থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে।
মোটকথা, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর জেরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি বর্তমানে এক জটিল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। ভবিষ্যতে দেশটির অর্থনীতি কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস