ঘুম থেকে উঠতে পারছেন না? হতাশায় জর্জরিতদের জন্য দারুণ উপায়!

জীবনে অনেক সময় এমন হয়, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতেই মন চায় না। বিছানা থেকে উঠতে গেলেই যেন রাজ্যের ক্লান্তি এসে চেপে ধরে। বিষণ্ণতা বা অবসাদ এর অন্যতম প্রধান উপসর্গ হল এই দৈনিক কাজে অনীহা।

যারা এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যান, তাদের কাছে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠা একটা বিশাল চ্যালেঞ্জের মতো মনে হয়। কোনোমতে যেন দিনটা পার করতে পারলেই বাঁচে তারা।

অবসাদ বা বিষণ্ণতা একটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। আমাদের দেশেও এর প্রকোপ বাড়ছে, যা উদ্বেগের কারণ।

অনেক সময় মানুষজন এটিকে গুরুত্ব দেন না, বা দিতে চান না। কিন্তু এর কারণে একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে পারে।

তাই, এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রয়োজন সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

ঘুম থেকে ওঠার এই কষ্ট দূর করতে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। সবার প্রথমে, নিজের জন্য একটি সুন্দর সকালের রুটিন তৈরি করুন।

এমন কিছু করুন যা আপনাকে সকালে ঘুম থেকে উঠতে উৎসাহিত করবে। যেমন, এক কাপ গরম চা অথবা পছন্দের কোনো খাবার দিয়ে দিন শুরু করার চেষ্টা করুন।

অনেকেই হয়তো অফিসের তাড়াহুড়োয় সকালের নাস্তার জন্য সময় পান না। কিন্তু সকালে একটু সময় নিয়ে পছন্দের খাবার খেলে মন ভালো থাকে, যা আপনাকে দিনের শুরুতেই সতেজ অনুভব করতে সাহায্য করতে পারে।

এরপর, অ্যালার্মের ব্যবহার করুন বুদ্ধিমানের সাথে। অনেকেই একটাই অ্যালার্ম ব্যবহার করেন, আর সেটা বন্ধ করে আবার ঘুমিয়ে পড়েন।

এর বদলে কয়েকটা অ্যালার্ম সেট করুন এবং সেগুলোকে বিছানা থেকে দূরে রাখুন। প্রথম অ্যালার্ম বাজার সাথে সাথে যদি আপনি বিছানা থেকে না ওঠেন, তাহলে দ্বিতীয়, তৃতীয় অ্যালার্ম বাজার সম্ভবনা থাকে।

এমতাবস্থায়, ঘুম থেকে ওঠা ছাড়া আপনার আর কোনো উপায় থাকবে না।

দিনের শুরুটা আরো সুন্দর করতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অভ্যাস করতে পারেন। রাতে ঘুমানোর আগে একটি ডায়েরিতে সারাদিনের ভালো ঘটনাগুলো লিখুন।

সকালে ঘুম থেকে উঠে সেই লেখাগুলো আবার পড়ুন। এতে আপনার মন ভালো থাকবে এবং দিনের শুরুটা অনেক ইতিবাচক হবে।

এছাড়াও, সকালে হালকা ব্যায়াম অথবা পছন্দের কোনো গান শুনতে পারেন।

আলোর ব্যবহারও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। হালকা আলো শরীরে প্রবেশ করলে ঘুম ঘুম ভাব কাটে। চিকিৎসকরা একে লাইট থেরাপি বলে থাকেন।

এটি বিষণ্ণতা কমাতে সহায়ক। সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ উজ্জ্বল আলোতে বসলে মন ভালো থাকে।

আপনার আশেপাশে যদি সূর্যের আলো আসার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে বাজারে এখন সহজেই লাইট থেরাপি দেওয়ার জন্য বিশেষ বাতি পাওয়া যায়, যা ব্যবহার করতে পারেন।

যদি দেখেন, এই সমস্যাগুলো আপনার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে, তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মনোবিদের সাহায্য নিন, প্রয়োজনে ওষুধ সেবন করুন।

অনেক সময় সঠিক চিকিৎসার অভাবে এই সমস্যাগুলো দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। মনে রাখবেন, মানসিক স্বাস্থ্যও শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।

কখনো যদি মনে হয়, কোনোভাবেই পারছেন না, তাহলে নিজেকে সময় দিন। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ছুটি নিন। বিশ্রাম নিন, নিজের ভালো লাগার কাজ করুন।

নিজের প্রতি সদয় হোন। সবার জীবন একরকম নয়, তাই অন্যদের সাথে নিজেকে তুলনা না করে নিজের যত্ন নিন।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *