ব্রিটিশ এক নারী, যিনি কয়েক মাস আগে একটি বেওয়ারিশ কুকুরের সামান্য আঁচড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে অবশেষে র্যাবিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এই ঘটনাটি সারা বিশ্বে র্যাবিস রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে নতুন করে সচেতনতা তৈরি করেছে, বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশে, যেখানে রাস্তার পশুদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি।
৫৯ বছর বয়সী ইয়ভন ফোর্ড নামের ওই ব্রিটিশ মহিলা গত ফেব্রুয়ারি মাসে মরক্কোতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি বেওয়ারিশ কুকুরের সামান্য আঁচড়ের শিকার হন তিনি। প্রথমে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি তিনি। কিন্তু এর কয়েক মাস পর, গত ১১ই জুন তিনি র্যাবিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ইয়ভনের মেয়ে, রবিন থম্পসন, তার মায়ের মৃত্যুর পর র্যাবিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং মানুষকে সতর্ক করতে এগিয়ে এসেছেন। তিনি জানান, তার মায়ের প্রথমে সামান্য মাথাব্যথা হয়েছিল। এরপর তিনি ধীরে ধীরে কথা বলতে, হাঁটতে, ঘুমাতে এবং গিলতে পারার ক্ষমতা হারান।
রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর তা মারাত্মক রূপ নেয় এবং শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু হয়।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, র্যাবিস একটি মারাত্মক ভাইরাস, যা সাধারণত সংক্রমিত পশুর কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই ভাইরাসের সুপ্তিকাল অনেক দিনের হতে পারে, এবং উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।
তাই, কোনো বন্য বা বেওয়ারিশ পশু দ্বারা আক্রান্ত হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে টিকা নেওয়া খুবই জরুরি।
বাংলাদেশেও র্যাবিসের ঝুঁকি রয়েছে। এখানে রাস্তার কুকুর ও বিড়ালের সংখ্যা অনেক বেশি, এবং তাদের মধ্যে র্যাবিস সংক্রমণের সম্ভাবনাও বেশি। তাই, আমাদের সবারই সচেতন থাকা উচিত।
বিশেষ করে, যারা কুকুর বা বিড়াল পোষেন, তাদের অবশ্যই নিয়মিতভাবে পশুদের র্যাবিস টিকা দিতে হবে। কোনো পশু কামড়ালে বা আঁচড় দিলে, দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
সরকার এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা র্যাবিস প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।
র্যাবিস একটি মারাত্মক রোগ, তবে সচেতনতা এবং উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আসুন, আমরা সবাই সচেতন হই এবং র্যাবিস মুক্ত বাংলাদেশ গড়ি।
তথ্য সূত্র: পিপল