বিখ্যাত ফ্যাশন আইকন ক্যারোলিন বেসেট কেনেডি’র জীবন নিয়ে নির্মিতব্য একটি বায়োপিকের পোশাক পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ছবিগুলোতে কেনেডির চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেত্রী সারাহ পিডজিওনের পোশাক এবং সাজসজ্জা দেখে অনেকেই হতাশ হয়েছেন। তাদের মতে, ছবিতে ক্যারোলিনের স্টাইল যথাযথভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়নি।
এই ঘটনায় বায়োপিকের পোশাক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বর্তমান সময়ের দর্শকদের প্রত্যাশা এবং তারকাদের ফ্যাশন নিয়ে মানুষের আগ্রহ নতুন করে সামনে এসেছে।
ক্যারোলিন বেসেট কেনেডি একাধারে ছিলেন একজন ফ্যাশন আইকন ও ক্যালভিন ক্লিনের জনসংযোগ বিভাগের কর্মী। ১৯৯০-এর দশকে তার আকর্ষণীয় পোশাকশৈলী ফ্যাশন দুনিয়ায় এক নতুন ধারার জন্ম দিয়েছিল। সাধারণ পোশাকেও কীভাবে রুচিশীল ও মার্জিত থাকা যায়, তা তিনি শিখিয়েছিলেন।
তার পরিপাটি সাজসজ্জা, পরিমিতিবোধ এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের কারণে তিনি দ্রুত সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেন। অনেকে তাকে ‘আমেরিকার নিজস্ব প্রিন্সেস ডায়ানা’ বলেও উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোতে কেনেডির চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেত্রীর পোশাক নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, ছবিতে ব্যবহৃত একটি ‘হার্মিস বার্কিন ব্যাগ’-এর উপস্থাপন নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
তাদের মতে, ব্যাগটি অতিরিক্ত নতুন এবং কঠিন দেখাচ্ছে। এছাড়া, অভিনেত্রীর চুলের রং নিয়েও অনেকে সমালোচনা করেছেন। এমনকি, ক্যারোলিন বেসেট কেনেডির আসল হেয়ার কালারিস্ট ব্র্যাড জনসও এই বিষয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তার মতে, নব্বইয়ের দশকে ক্যারোলিনের চুলের যে রং ছিল, তা বর্তমান সময়ের সঙ্গে একদমই মেলে না।
এই বিতর্কের কারণ হলো, বায়োপিকের ক্ষেত্রে পোশাক পরিকল্পনার গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। এখনকার দর্শক চান, ছবিতে চরিত্রগুলো যেন তাদের বাস্তব জীবনের মতোই দেখা যায়।
পোশাক, মেকআপ এবং চুলের স্টাইল— সবকিছুই আসল চরিত্রের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হয়। গ্যারি ওল্ডম্যান যেমন উইনস্টন চার্চিলের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মেকআপের পেছনে ২০০ ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় করেছিলেন। এমনকি, অ্যামি ওয়াইনহাউজের বায়োপিকের জন্য নির্মাতারা আসল পোশাক ব্যবহার করেছিলেন।
ক্যারোলিন বেসেট কেনেডির ক্ষেত্রেও বিষয়টি তাই। কারণ, তার ফ্যাশন সেন্স শুধু একটি পোশাকের বিষয় ছিল না, বরং এটি ছিল তার ব্যক্তিত্বের প্রতিচ্ছবি। অনেকেই মনে করেন, বায়োপিকে যদি তার স্টাইল সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলা না হয়, তবে তা হবে ফ্যাশনের প্রতি এক ধরনের অবিচার।
ক্যারোলিন বেসেট কেনেডির ফ্যাশন এখনো অনেক ডিজাইনার ও ফ্যাশন সচেতন মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা। তার পোশাকের মাধ্যমে ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তোলার বিষয়টি সবসময়ই প্রশংসিত হয়েছে।
এমন একজন ফ্যাশন আইকনের জীবন নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রে পোশাকের ভুল উপস্থাপনা দর্শকদের হতাশ করতে পারে। বর্তমানে বায়োপিকের এই যুগে, নির্মাতাদের তাই পোশাক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন