শিরোনাম: সাবেক স্বামীর করা মামলায় হতবাক, মুখ খুললেন জনপ্রিয় উপস্থাপিকা ওয়েন্ডি উইলিয়ামস।
নিউ ইয়র্ক, ২৫ জুন: জনপ্রিয় মার্কিন টক শো উপস্থাপিকা ওয়েন্ডি উইলিয়ামস জানিয়েছেন, তার প্রাক্তন স্বামী কেভিন হান্টার তার (ওয়েন্ডির) হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন, সে বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
আদালতের কাছে দায়ের করা এই মামলার বিষয়ে তিনি যে একেবারেই অবগত নন, সে কথাই জানিয়েছেন ওয়েন্ডি।
বৃহস্পতিবার টিএমজেড-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি একেবারেই জানি না হান্টার আমার হয়ে আড়াইশো মিলিয়ন ডলারের একটি মামলা করেছেন।” একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আমি চাইও না সে আমার জীবনে কোনোভাবে জড়িত থাকুক। কারণ, আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে অনেক আগেই।”
জানা গেছে, এই মামলায় ওয়েন্ডির আইনি অভিভাবক সাবরিনা মরিসেসহ বিচারক লিসা সোকলফের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ওয়েন্ডির সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন হান্টার।
ওয়েন্ডি এবং হান্টার দীর্ঘদিন বিবাহিত জীবন অতিবাহিত করেছেন। ২০১৯ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
ওয়েন্ডি তার প্রাক্তন স্বামী সম্পর্কে বলেন, “সে সবসময়ই অর্থলোভী ছিল। তার এই ধরনের কাজ করাটা নতুন কিছু নয়।
মামলার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “সে জিততে পারবে না।”
ওয়েন্ডির আইনজীবী জো টাকোপিনা নিশ্চিত করেছেন যে ওয়েন্ডি এই মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তিনি আরও জানান, ওয়েন্ডি এতে খুশি নন।
তিনি বলেন, “হান্টারের কোনো অধিকার নেই তার (ওয়েন্ডির) নাম ব্যবহার করার। যদি আমরা কোনো মামলা করতে চাই, তাহলে তার সাহায্য নেওয়ারও কোনো প্রয়োজন নেই। তাই, ধন্যবাদ, তবে না।”
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে ওয়েন্ডিকে একটি আইনি অভিভাবকত্বের অধীনে রাখা হয়েছে। এই মামলায় সাবরিনা মরিসেসহ ৪৮ জন অভিযুক্তের নাম রয়েছে।
এর মধ্যে ওয়েলস ফার্গো এবং তার একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রও রয়েছে। হান্টার চাইছেন, ওয়েন্ডিকে দীর্ঘদিন ধরে বন্দী করে রাখার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া হোক।
মামলার নথি অনুসারে, হান্টার ওয়েন্ডির অভিভাবকত্ব বাতিলের আবেদন করেননি।
বরং তিনি একজন নতুন নিরপেক্ষ অভিভাবক নিয়োগের আবেদন করেছেন। একইসঙ্গে তিনি মামলার নথি প্রকাশ করা এবং ওয়েন্ডিকে “অনিচ্ছাকৃত কারাবাস” থেকে মুক্তি দেওয়ারও আবেদন করেছেন।
এছাড়া, আর্থিক ক্ষতি, সুনামহানি, মানসিক কষ্ট, আইনি খরচ এবং স্বাধীনতা হরণের জন্য আড়াইশো মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন তিনি।
আদালতে কেভিন হান্টার নিজেকে ওয়েন্ডির “পরবর্তী বন্ধু” হিসেবে ঘোষণার আবেদন করেছেন।
এই পদটি তাকে এমন একজন ব্যক্তির পক্ষে আইনিভাবে কাজ করার ক্ষমতা দেবে যিনি নিজের অধিকার রক্ষা করতে অক্ষম এবং যখন কোনো অভিভাবক তাদের সেরা স্বার্থে কাজ করছেন না।
কেভিন হান্টারের আইনজীবী লাশন থমাস জানিয়েছেন, দুর্ভাগ্যবশত, ওয়েন্ডি তার মামলার সমর্থনে থাকা সমস্ত প্রমাণ সম্পর্কে অবগত নন।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি যথেষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করার পরিকল্পনা করছি, যাতে তার অধিকার পুনরুদ্ধার করা যায় এবং আর্থিক ক্ষতি পূরণ করা যায়।
২০২২ সালের বসন্তে প্রথম ওয়েন্ডির আইনি অভিভাবকত্বের আদেশ দেওয়া হয়। এরপর থেকে সাবরিনা মরিসেসহ ওয়েন্ডির ওপর সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব ছিল।
জানা গেছে, এর আগে ওয়েন্ডি প্রাথমিক প্রগ্রেসিভ অ্যাফেসিয়া (বাকবৈকল্য) এবং ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া (এফটিডি)-তে আক্রান্ত হন।
গত জানুয়ারিতে দ্য ব্রেকফাস্ট ক্লাবে এক সাক্ষাৎকারে ওয়েন্ডি বলেছিলেন, “আমি মানসিকভাবে দুর্বল নই, তবে আমি মনে করি আমি কারাগারে বন্দী।”
তিনি আরও বলেছিলেন, “এই ব্যবস্থাটি ভেঙে গেছে। এই ব্যবস্থাটি অনেক কিছু মিথ্যা প্রমাণ করেছে। গত তিন বছর ধরে আমি এই ব্যবস্থার জালে আটকা পরে আছি।”
তথ্য সূত্র: পিপল