আমেরিকানদের অন্য দেশের নাগরিকদের সাথে বিয়ের গল্প নিয়ে তৈরি হওয়া একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন শো হলো ‘৯০ ডে ফিয়ান্সে’। সম্প্রতি এই শো-এর নব্বইতম বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে, যা দর্শকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। সম্পর্কের উত্থান-পতন, ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে প্রেম এবং বিয়ের মতো বিষয়গুলো দর্শকদের কাছে সবসময়ই আগ্রহের বিষয়।
টিএলসি চ্যানেলে প্রচারিত এই শো-এর জনপ্রিয়তার কারণ এবং এর পেছনের গল্প নিয়েই আজকের আলোচনা।
‘৯০ ডে ফিয়ান্সে’ মূলত এমন আমেরিকানদের নিয়ে তৈরি, যারা অন্য দেশের নাগরিকদের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ান এবং তাদের বিয়ে করার জন্য প্রস্তুত হন। এই শো-এর মূল আকর্ষণ হলো, এই দম্পতিদের ৯০ দিনের মধ্যে বিয়ে করতে হয়।
কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে আসার জন্য তাদের একটি বিশেষ ভিসা (K-1 ভিসা) দেওয়া হয়, যার মেয়াদ থাকে ৯০ দিন। এই সময়ের মধ্যে তাদের বিয়ে সম্পন্ন করে আমেরিকান নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া শুরু করতে হয়।
জানুয়ারি ২০১৪ সালে টিএলসি-তে ‘৯০ ডে ফিয়ান্সে’ যাত্রা শুরু করে। এরপর এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে এবং এটি বিভিন্ন স্পিন-অফ তৈরি করতে উৎসাহিত করে।
বর্তমানে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির বেশ কয়েকটি সংস্করণ রয়েছে, যেমন – ‘৯০ ডে ফিয়ান্সে: বিফোর দ্য ৯০ ডেজ’, ‘৯০ ডে: দ্য সিঙ্গেল লাইফ’, ‘৯০ ডে ফিয়ান্সে: লাভ ইন প্যারাডাইজ’ ইত্যাদি।
এই শো-এর অন্যতম পরিচিত মুখ লরেন এবং অ্যালেক্সি ব্রোভানিক। তারা ২০১৫ সালে শো-তে যোগ দেন।
ইসরায়েলে জন্মসূত্রে পরিচিত হওয়ার পর তাদের প্রেম হয় এবং পরবর্তীতে তারা বিয়ে করেন। দর্শকদের ভালোবাসার পাশাপাশি তারা সমালোচনার শিকারও হয়েছেন।
আপনি যা-ই করুন না কেন, সবসময়ই সমালোচিত হবেন।
আরেক জনপ্রিয় জুটি হলেন কেনি নিডারমেইয়ার এবং আরমান্ডো রুবিও। ‘৯০ ডে ফিয়ান্সে: দ্য আদার ওয়ে’ -তে তাদের দেখা গিয়েছিল।
কেনি মেক্সিকোতে গিয়ে আরমান্ডোকে বিয়ে করেন এবং আরমান্ডোর মেয়ের সঙ্গে একত্রে বসবাস শুরু করেন। তাদের গল্পটিও দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে।
আমরা আমাদের গল্প বলতে পেরেছি এবং এটি অনেক মানুষকে সাহায্য করেছে, যারা আমাদের মতো পরিস্থিতিতে আছে।
টিএলসি-র প্রোডাকশন ও ডেভেলপমেন্ট বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যালন ওরস্টেইন এই শো-এর সাফল্যের রহস্য ব্যাখ্যা করেন। তার মতে, এই শো-এর মূল আকর্ষণ হলো এতে প্রেম, নাটক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মিশ্রণ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, শো-টি কোনো স্ক্রিপ্ট মেনে চলে না। তারা এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করেন, যারা তাদের জীবনের গল্প খোলাখুলিভাবে বলতে পারেন।
‘৯০ ডে ফিয়ান্সে’ শুধু একটি টেলিভিশন শো নয়, এটি বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে সম্পর্কের একটি প্রতিচ্ছবি। ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন জীবনযাত্রা এবং ভালোবাসার এক নতুন সংজ্ঞা তৈরি করে এই শো।
দর্শকদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আগামী ৬ জুলাই, টিএলসি-তে রাত ৮টায় (ইটি/পিটি) ‘৯০ ডে ফিয়ান্সে: হ্যাপিলি এভার আফটার?’ -এর নতুন সিজন শুরু হতে যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন